কুমিল্লায় আশ্রয় কেন্দ্রে শিশুখাদ্যের সংকট

কুমিল্লায় বন্যায় ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বহু মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে নানা খাদ্য সহায়তা এলেও সংকটে রয়েছে শিশুরা।

কুমিল্লায় বন্যায় ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বহু মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে নানা খাদ্য সহায়তা এলেও সংকটে রয়েছে শিশুরা। শুকনো বিস্কুট আর কলা একমাত্র ভরসা তাদের। খাদ্যের অভাবে এক-তিন বছর বয়সী শিশুদের কাঁদতে দেখা গেছে। গতকাল সকালে বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে এ দৃশ্য।

বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অন্তত ২০ মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া ত্রাণের শুকনো বিস্কুট ও কলা শিশুদের খাওয়ানো যাচ্ছে না। এদের কান্নায় আশ্রয় কেন্দ্র কেঁপে উঠছে। বিশেষ করে এক-তিন বছরের শিশু নিয়ে অভিভাবক আছেন বিপাকে। বিত্তবানদের কাছে তাদের আকুতি, শিশুদের কথা বিবেচনায় সামান্য হলেও যেন শিশু খাবার সরবরাহ করা হয়। এতে কিছুটা হলেও তাদের সান্ত্বনা দেয়া যাবে।

ফকিরবাজার উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুই শতাধিক মানুষ রয়েছে। ৩০-৪০টি শিশু রয়েছে। যাদের বয়স পাঁচ বছরের নিচে। গত দুই-তিনদিন ধরে কেউ শুকনা খাবার মুখে নিচ্ছে না।

ভরসা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে রেশমা আক্তার বলেন, ‘১৬ মাসের ছেলেকে নিয়ে বহু কষ্টে আছি। তার কান্না আর সইতে পারছি না। সে বুকের দুধ একেবারেই মুখে নিতে চাচ্ছে না।’ সরকার ও মানবিক সংগঠনগুলোর প্রতি শিশুখাদ্য প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।

আজ্ঞাপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রের রহিমা বলেন, ‘দুই বছরের মেয়ে রয়েছে তার। বিস্কুট, পাউরুটি, কলা মুখেই নিচ্ছে না সে।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কুমিল্লায় সরকারিভাবে মোট ৭১৪টি কেন্দ্রে ১৬ হাজার ৬০ জন বিভিন্ন বয়সের শিশু আশ্রয় নিয়েছে। এসব শিশুর মধ্যে যাদের বয়স তিন বছরের ওপর তাদের শুকনো বিস্কুট ও কলা খাইয়ে কোনো রকম দিন পার করা গেলেও, যাদের বয়স এক থেকে তিন বছরের মধ্যে সেসব শিশুকে নিয়ে বিপদে আছেন তাদের অভিভাবক।’

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শিশুখাদ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চেষ্টা করছি শিশুখাদ্য সরবরাহের।’

আরও