নির্ধারিত সময়ে আগস্টের বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। গাজীপুরের কলম্বিয়া এলাকায় গতকাল সকাল ১০টার দিকে তারা এ বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে সড়কটিতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে মালিকপক্ষ বকেয়া পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে ১ ঘণ্টা পর শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
পুলিশ ও আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকায় থাকা টিএনজেড গ্রুপের চার-পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আগস্টের বেতন বকেয়া। কয়েক দিন ধরে বেতন পরিশোধের দাবিতে তারা কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। ১৪ সেপ্টেম্বর তারা কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেয়। সে অনুযায়ী শ্রমিকরা ওইদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। কিন্তু সারা দিন পার হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন না দিয়ে উল্টো কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।
বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল সকালে কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে তারা কলম্বিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। আগামী মঙ্গলবার মালিকপক্ষ বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিলে ১ ঘণ্টা পর বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাসের ২০ দিন চলে গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন নিয়ে টালবাহানা করছে। গত বৃহস্পতিবার বেতন দেয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে। তারা আমাদের কোনো মাসেই ঠিকমতো বেতন দেয় না। প্রতি মাসেই আন্দোলন করে বেতন নিতে হয়।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘বকেয়া বেতন না দেয়ায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। ২৪ সেপ্টেম্বর তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।’
এদিকে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, গাজীপুর, সাভার-আশুলিয়া-জিরানী, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা মেট্রোপলিটন ও চট্টগ্রাম এলাকার মোট ২ হাজার ১৪৪ কারখানার মধ্যে গতকাল খোলা ছিল ২ হাজার ১৩০টি কারখানা। এর মধ্যে গাজীপুরে খোলা ছিল ৮৭৬টি ও বন্ধ ছিল তিনটি। সব এলাকা মিলিয়ে সাময়িক বন্ধ বা ছুটি থাকা কারখানার সংখ্যা ১৪। আগস্টের বেতন দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৬৩টি কারখানায়। বাকি ৮১টিতে এখনো বেতন দিতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।