নিজ দলের কর্মী সালমানকে গলা কেটে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) তিন সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ওই মামলায় অন্য চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শওকত আলী এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার চানপাড়া গ্রামের মৃত এরশাদের ছেলে মো. সানোয়ার, গোমস্তাপুর উপজেলার বালুগ্রাম রাজারামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম ও একই উপজেলার বালুগ্রাম দক্ষিণটোলা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুস শুকুর ওরফে শুকুর।
অন্যদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন গোমস্তাপুর উপজেলার বোগলা গোপালনগর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সামশুল হক, নওগাঁর মান্দা উপজেলার আব্দুল মোতাকাব্বির ওরফে বুলবুল, একই উপজেলার চকপুস্তম গ্রামের নজরুল ইসলাম টুনুর ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল ও নিমতলা ঘণ্টুটোলা গ্রামের মাহাতাবের ছেলে মো. শামীম। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আসামি সানোয়ার ছাড়া সব আসামি রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, নেতৃত্ব নিয়ে জেএমবির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে জেলার নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের খোলসি বোরিয়া গ্রামের একটি আমবাগানে মো. রুহুল আমীন ওরফে সালমানকে গলা কেটে হত্যা করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। সালমান ঢাকার ধানমন্ডির আসগর আলীর ছেলে। তাকে হত্যার পর আসামিরা মরদেহ থেকে মাথাটি আলাদা করে জেলার গোমস্তাপুর থানার মহানন্দা নদীর ধাইনগর ঘাটে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন। এ ঘটনায় কয়েক দিন পর পুলিশ পুঁতে রাখা মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ২৭ এপ্রিল নাচোল থানার তত্কালীন এসআই আনিসুর বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে নাচোল থানায় মামলা করেন। পরে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুস শুকুর ওরফে শুকুরসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে তারা এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নাচোল থানার এসআই শ্রী গৌতম চন্দ্র মালী ২০১৫ সালের ২৯ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আদালত।