মিরসরাইয়ে সাপের উপদ্রব অ্যান্টিভেনম সংকট

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বন্যার পানি কমে গেলেও বেড়েছে সাপের উপদ্রব। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সাপের কামড়ে দুই শতাধিক মানুষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বন্যার পানি কমে গেলেও বেড়েছে সাপের উপদ্রব। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সাপের কামড়ে দুই শতাধিক মানুষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম নেই হাসপাতালটিতে। সাপে কাটা একজন গুরুতর রোগীর জন্য ১০ ভায়াল অ্যান্টিভেনম প্রয়োজন। ১০ ভায়ালে এক ডোজ। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ ভায়াল অ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে দুজন গুরুতর রোগীকে চিকিৎসা দেয়া যাবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকালে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দেওয়ারপুর গ্রামের কান্তি নাথের ছেলে সীমান্ত নাথ সাপের কামড়ে মারা যান। ওইদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছয়জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। সর্বশেষ ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের লক্ষ্মী রানী দাস নামে এক নারী চিকিৎসা নিয়েছেন।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে, জানুয়ারি-জুলাই পর্যন্ত ২০৭ জন সাপে কাটা রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারতে দুজন, ফেব্রুয়ারিতে নয়জন, মার্চে ১৬, এপ্রিলে ৩৬, মে মাসে ৪৫, জুনে ২৯ ও জুলাইয়ে ৭০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। তবে আগস্টে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ মাসে ৮৩ জন সাপে কাটা রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে কতজন চিকিৎসা নিয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে শতাধিক হতে পারে।

জানা গেছে, আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বন্যার পানি ঘরে ঢুকে পড়ায় বাসিন্দারা আশ্রয় কেন্দ্র ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়। বন্যার পানির সঙ্গে সে সময় ঘরে ঢুকে পড়ে বিষাক্ত সাপ। বন্যার পানি নেমে গেলেও সাপগুলো রয়ে গেছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, সাপে কাটা একজন রোগীকে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। যদি ওই রোগীর শরীরের বিষক্রিয়া বেশি ছড়িয়ে পড়ে তখনই অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন পড়ে। অহেতুক সাপে কাটা কোনো রোগীকে অ্যান্টিভেনম দেয়া হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সাপে কাটা একজন গুরুতর রোগীর জন্য ১০ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ ভাইলম অ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে।

এ ব্যাপারে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সাপে কাটা প্রত্যেক রোগীকে অ্যান্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয় না। যে রোগীর শরীরে বিষক্রিয়া বেশি ছড়িয়ে পড়ে তাকে শুধু অ্যান্টিভেনম দেয়া হয়। এছাড়া সাপে কাটা একজন রোগীকে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। হাসপাতালে ২০ ভায়াল অর্থাৎ দুই ডোজ অ্যান্টিভেনম রয়েছে। অহেতুক অ্যান্টিভেনম দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে।’

আরও