কৃষি গবেষণা

সাফল্য থাকলেও বরাদ্দ আটকে আছে একই বৃত্তে

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জমি হ্রাসসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে বাংলাদেশের কৃষি খাত। স্বল্প জমিতে তাই অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিজ্ঞানীরা। জলবায়ুসহিষ্ণু, উচ্চফলনশীল ও হাইব্রিড জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে সার্বিকভাবে বেড়েছে বিভিন্ন খাদ্যশস্যের উৎপাদন। যদিও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সে হার অনেকটাই কম। এর জন্য

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জমি হ্রাসসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে বাংলাদেশের কৃষি খাত। স্বল্প জমিতে তাই অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিজ্ঞানীরা। জলবায়ুসহিষ্ণু, উচ্চফলনশীল ও হাইব্রিড জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে সার্বিকভাবে বেড়েছে বিভিন্ন খাদ্যশস্যের উৎপাদন। যদিও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সে হার অনেকটাই কম। এর জন্য অপ্রতুল আর্থিক বরাদ্দকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছেন কৃষি গবেষকরা। তাদের দাবি, সার্বিকভাবে বরাদ্দ বাড়লেও ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে তা প্রায় একই বৃত্তে আটকে আছে। 

গবেষকরা বলছেন, দেশে কৃষিজমি কমলেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনসংখ্যা। স্বল্প জমিতে অধিক হারে খাদ্য উৎপাদন করতে গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। যদিও দেশের বিভিন্ন খাতে হওয়া গবেষণার মধ্যে গর্ব করার মতো একমাত্র খাত কৃষি। এ খাতের সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞানীরা বছরে গড়ে প্রায় অর্ধশত ফসলের জাত উদ্ভাবন করছেন। বিভিন্ন শস্যে জিনগত উৎপাদনশীলতা বাড়াতেই এখন জোর দিচ্ছেন কৃষি গবেষকরা। এর জন্য অবশ্য উন্নয়ন বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। তা না হলে ভবিষ্যতে বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

কৃষি খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে গবেষণা ও উন্নয়ন বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ১১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা বিনিময় হারের ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে রূপান্তর করলে তা ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার দাঁড়ায়। আগের অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা বা ১২ কোটি ৩২ লাখ ডলার। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা বা ১২ কোটি ২৪ লাখ ডলার বরাদ্দ ছিল এ খাতে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) ‘ন্যাশনাল ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি পলিসি প্ল্যান অব অ্যাকশন অ্যান্ড বাংলাদেশ থার্ড কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান মনিটরিং রিপোর্ট’-এ এ তথ্য উঠে এসেছে। 

দুই দশক আগেও প্রায় একই পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল কৃষির গবেষণা ও উন্নয়নে, যা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (আইএফপিআরআই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন ঘেঁটে জানা যায়। ‘এগ্রিকালচারাল আরঅ্যান্ডডি ক্যাপাসিটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন দি এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিয়ন’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০২ সালে বাংলাদেশের কৃষি খাতে গবেষণা ও উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। অথচ তারও চার বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে বরাদ্দ ছিল ৮ কোটি ২০ লাখ ও ১৯৯১ সালে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। 

কৃষি গবেষকরা বলছেন, কৃষি খাতের গবেষণা ও উন্নয়নে বরাদ্দ বেড়েছে খুবই সামান্য। তবে টাকার মান কমেছে; বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। সে হিসেবে গবেষণায় বরাদ্দ তেমন বাড়েনি। ২০০২ সালে এ খাতে ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার বরাদ্দ দিলেও তারও দুই দশক পর ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল এ খাতে। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপণন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সামগ্রিক গবেষণার কথা বললে চোখে পড়ার মতো গবেষণা কৃষিতেই হয়েছে। কিন্তু এতে বরাদ্দ বাড়ছে না খুব বেশি। তাছাড়া কৃষি খাতে মোট গবেষণার ৮০-৯০ শতাংশই হয় বৈদেশিক দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়নে। সরকারি অর্থায়নে খুব কম গবেষণা হয়। সামগ্রিকভাবে দেশে এখনো গবেষণার পরিবেশ গড়ে ওঠেনি।’ 

ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালে মোট জিডিপির ২ শতাংশ গবেষণায় বরাদ্দ থাকতে হবে। কিন্তু এখনো তা শূন্য দশমিক ৪ থেকে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। দীর্ঘমেয়াদে উন্নতি করতে হলে গবেষণায় উন্নতি করতে হবে। এখন গবেষণামুখী একটি প্রজন্ম গড়ে উঠছে। তাদের সামাজিক স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের ধরে রাখতে এ খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে নতুন জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।’ 

কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে কাজ করছে জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম (নার্স)। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা ও গবেষণা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও ফলাফল মূল্যায়ন করে প্রতিষ্ঠাটি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ গবেষণা সংস্থা হলো কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)। এছাড়া আরো ১২টি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে নার্সের অধীনে। 

বিএআরসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানান, নার্সভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোয় গবেষক পদ রয়েছে প্রায় তিন হাজার। বর্তমানে কর্মরত ১ হাজার ৮৫০ জনের মতো। অথচ ১৯৯১ সালেও দেশে কৃষি খাতে মোট গবেষক ছিলেন ১ হাজার ৬৩৫ জন। ১৯৯৬ সালে ছিলেন ১ হাজার ৭৭২ ও ২০০২ সালে ১ হাজার ৮০২ জন। সে হিসেবে গবেষণায় বরাদ্দের পাশাপাশি গবেষকও বাড়েনি।

কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থা উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল, তেল ফসল, কন্দাল ফসল ও ডাল ফসলসহ বিভিন্ন খাদশস্যের জাত উদ্ভাবন করে আসছে। তাদের উদ্ভাবিত সবজির জাত রয়েছে ১৩৫টি, যার মধ্যে ২৪টি হাইব্রিড। এর মধ্যে বারি হাইব্রিড সামার টমেটো-৮, বারি বেগুন-১২ ও বারি লাউ-৪ খুব জনপ্রিয়। প্রতিষ্ঠানটির আমের জাত রয়েছে ১৮টি, যার পাঁচটি বাণিজ্যিক ও চারটি হাইব্রিড। এর মধ্যে বারি আম-৪, বারি আম-১১, বারি আম-১২ বা গৌরমতি ও বারি আম-৩ বা আম্রপালি উল্লেখযোগ্য। কাঁঠালের জাত উদ্ভাবন হয়েছে ছয়টি। এছাড়া পেয়ারা, বাতাবি লেবু, আলু, চীনাবাদাম, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বারির বিজ্ঞানীরা। 

বারির মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা অনেক এগিয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক জাত ও প্রায় সমসংখ্যক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বারির বিজ্ঞানীরা। অবশ্য জলবায়ু মোকাবেলা, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতসহ নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। তবে সব অর্থের কারণে হবে তা নয়, আমাদের সদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে। দেশে উৎপাদন-পরবর্তী ক্ষতি ৩০ শতাংশ। আমরা এসএমই ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের নিয়ে এটা কমিয়ে আনতে চাই। এভাবে সবাই কাজ করলে তাহলে অপচয় কমবে।’ 

বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। দেশের মোট কৃষিজমির প্রায় ৭৫ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেন কৃষক। ধানের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা। এ পর্যন্ত ১১৩টি জাত উদ্ভাবন করেছে প্রতিষ্ঠানটি; যার মধ্যে রয়েছে লবণাক্ততাসহিষ্ণু, খরাসহিষ্ণু, বন্যাসহিষ্ণু, পোকামাকড়সহিষ্ণু ও ঠাণ্ডাসহিষ্ণু ধানের বিভিন্ন জাত। এর বাইরেও বর্তমানে তাপসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন ব্রির বিজ্ঞানীরা। তারা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে জনপ্রিয় জাত ব্রিধান ২৮ ও ২৯। ফলন কমে যাওয়া ও পোকামাকড় আক্রমণ করায় এখন ব্রিধান ৮৯, ৯২ ও ১০২ জাত দিয়ে সেগুলো প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এসব জাতের ফলন ব্রিধান ২৮ ও ২৯-এর চেয়ে হেক্টরপ্রতি প্রায় দুই টন বেশি। আমন মৌসুমে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল ব্রিধান ১১। এর পরিবর্তে ব্রিধান ৭৫, ৮৭, ৯৩, ৯৪ ও ৯৫ প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। আউশ মৌসুমে ব্রিধান ৪৮ জনপ্রিয় ছিল। তার পরিবর্তে এখন ব্রিধান ৮৩, ৮৫ ও ৯৮ প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে, যেগুলোর ফলন আগের জাতগুলোর চেয়ে বেশি।

ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌এ দেশে এমনও অবস্থা ছিল মানুষ খেতে পারত না। খুব বেশি খাদ্য ঘাটতি ছিল। দুর্ভিক্ষ হতো। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে প্রধান খাদ্যশস্য চালের কোনো ঘাটতি নেই। এটা মূলত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কারণে সম্ভব হয়েছে। ব্রির পক্ষ থেকে “‍রাইস ভিশন ২০৫০ অ্যান্ড বিয়ন্ড” পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তখন জনসংখ্যা কেমন হবে, খাদ্য কেমন প্রয়োজন হবে সেগুলো নিয়ে আমরা পরিকল্পনা করেছি। গত ১২-১৩ বছরে আমরা গড়ে ছয় লাখ টন চাল উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে ধান উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। বায়োটেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে। বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জলবায়ুসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এটা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে কখনো দুর্ভিক্ষ হবে না।’

কৃষি খাতে গবেষণায় বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‌গবেষণায় বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। গবেষণার জন্য প্রতিনিয়ত অবকাঠামো ও নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আমাদের গবেষণা খাতে সিস্টেমেটিক অর্থায়ন দরকার। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা আমরা বলছি, সেটার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। বায়োটেকনোলজিক্যাল রিসার্চের জন্য অবকাঠামো ও মানবসম্পদ অর্থাৎ গবেষককে ধরে রাখার বিষয়ে জোর দিতে হবে। গবেষকদের আমরা ধরে রাখতে পারছি না। যারা গবেষণায় ভালো তারা অল্প বয়সে অবসরে চলে যাচ্ছেন। গবেষণায় তাদের ধরে রাখতে হবে। আগামী দিনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণার বিকল্প নেই। আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ আমরা বলতে পারছি শুধু গবেষণার জন্য।’

ব্রির সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যায়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধানের জিনগত উৎপাদনশীলতা বাড়ছে না। প্রতি বছর দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ। সে হিসেবে ২০৫০ সাল নাগাদ জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২১ কোটি ৫৪ লাখে। তখন দেশের মানুষের চাহিদা পূরণে ৪ কোটি ৪৬ লাখ টন চালের প্রয়োজন হবে। সে হিসাবে নতুন জাত উদ্ভাবন ও জিনগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের মাধ্যমে বছরে হেক্টরপ্রতি ৪৪ কেজি হারে চাল উৎপাদন বাড়াতে হবে। বর্তমানে জাত উদ্ভাবন ও জিনগত কারণে বছরে প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ কেজি হারে চাল উৎপাদন বাড়ছে।

খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে গবেষণার মাধ্যমে ফসলের জিনগত উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে জানিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে সে পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিভিন্ন কারণে শস্য অপচয় হয়, তা কমাতে হবে। যা উৎপাদন হয় তার ২০-২৫ শতাংশ এখন নষ্ট হয়। অপচয় কমিয়ে আনতে হবে। উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা দুটোই বাড়াতে হবে। গবেষণায় যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয় তাও কিন্তু যথাযথ ব্যবহার হয় না। যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বেসরকারি খাতের চেয়েও অনেক পিছিয়ে যাবে।’

ধানসহ প্রায় ২১টি ফসলের ১২৮টি জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)। এর মধ্যে জলবায়ুসহিষ্ণু বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌কৃষি খাতে গবেষণা বাড়াতে হবে। কৃষিতে সরকার এখন অনেক বরাদ্দ দিচ্ছে। এর মধ্যে প্রণোদনা, ভর্তুকি ও প্রকল্পে বেশির ভাগ চেলে যাচ্ছে। কিন্তু কৃষি গবেষণায় তুলনামূলকভাবে বরাদ্দ বাড়ছে না। এটা দু-তিন গুণ বাড়াতে হবে।’

আরও