উজানের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে রংপুরে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে। শুক্রবার
(২৭ সেপ্টেম্বর) দিনভর নদীতে ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে নদীর তীরবর্তী
নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপবাসী বন্যার আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর
বিভাগে ৯০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দুদিন ধরে রংপুর বিভাগে বিরামহীনভাবে
বৃষ্টি পড়ছে। সেই সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের উজানে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে করে তিস্তা
নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকালে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে
বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর পানি
বাড়তে থাকে। দিনভর পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিকাল ৩টায় বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার
নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম
জেলায় তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচর
এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এদিকে চরাঞ্চলের বাসিন্দারা তিস্তা নদীর জেগে ওঠা
চরে শীতকালীন আগাম শাক-সবজি চাষের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। নদীর পানি বৃদ্ধিতে
তা ভেস্তে গেছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী
বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যার কারণে আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
হয়। পানি যেহেতু বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে আসার পূর্বাভাস রয়েছে, তাই এলাকার মানুষকে
সতর্ক করা হয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, রংপুর
বিভাগে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই সঙ্গে উজানে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি
বাড়ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পানি বৃদ্ধির খবর দেয়া হয়েছে।
এদিকে রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে ৯১৯
মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে ১৩১ মিলিমিটার, দিনাজপুরে ১৯৭, নীলফামারীর
সৈয়দপুরে ১৮৩, ডিমলায় ১৪১, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৭৪ ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৯৩ মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত হয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, শুক্রবারের
মতো শনিবারও রংপুর বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি
অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণেরও পূর্বাভাস রয়েছে।