করোনা ভাইরাসে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর দায় এড়াতে পারে না বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেককে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।
চিঠিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিকিৎসকদের চিকিৎসায় আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মানসম্পন্ন হাসপাতাল নির্ধারণেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রীকে পাঠানো এক চিঠিতে এসব কথা উল্লেখ করা হয়।
বিএমএর সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং মহাসচিব মো. এহতেশামুল হক চৌধুরীর স্বাক্ষরে এ চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরন্তর ও নিবিড়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
মানহীন পিপিই, মাস্ক, জোড়াতালি দিয়ে অবৈজ্ঞানিকভাবে দ্রুত তৈরি করা কভিড আইসিইউ, অপর্যাপ্ত ট্রেনিং, রোগীদের খামখেয়ালিপনা, স্বল্প পরিসরে কভিড, নন-কভিড চিকিৎসার কারণে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী স্বল্পতা, থাকা-খাওয়ার অব্যবস্থাসহ এসব বিষয়ে অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের নির্লিপ্ততা, উদাসীনতা, অদূরদর্শীতা, সমন্বয়হীনতার কারণে এখন পর্যন্ত ১১০০ চিকিৎসকসহ ৩৫০০ স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। ৪৪ জন চিকিৎসক এবং নার্সসহ ৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। এহেন জাতীয় ক্ষতির জন্য অনেকাংশে আপনার মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর দায় এড়াতে পারে না। এহেনও আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এত বহুলাংশ আক্রান্ত ও মৃত্যু আজ পর্যন্ত কোনো কোভিড-১৯ সংক্রমিত দেশে ঘটেনি।’
বিভিন্ন হাসপাতালে কভিড-১৯ আক্রান্ত সংবাদকর্মী, পুলিশ, আইনজীবীসহ অনেকের চিকিৎসার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখার বিষয়টি নজরে আসার বিষয়টি উল্লেখ করে বিএমএর অভিযোগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রথম সারির যোদ্ধা চিকিৎসকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগ্রহ নেই।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বা দেশের অন্য কোন হাসপাতালে কভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্যথায় পরবর্তীতে উদ্ভূত যে কোন পরিস্থিতিতে আপনার মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর দায়ী থাকবে।