রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে অবস্থিত রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ২০১৬ সালে উদ্ভাবন করা হয় পেয়ারার নতুন জাত ‘বারি পেয়ারা ৪’। নাবি ও উচ্চফলনশীল পেয়ারার এ জাত জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধিত হয় ২০১৭ সালে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বীজহীন ও সুস্বাদু হওয়ায় জাতটি পাহাড়ের পাশাপাশি সারা দেশে পেয়ারা চাষে বিপ্লব ঘটাবে।
রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে সাত বছরের গবেষণার ফল বারি পেয়ারা ৪। সম্পূর্ণ বীজমুক্ত ও কচকচে এ পেয়ারা বেশ মিষ্টি (টিএসএস ৯ দশমিক ৫-১০ ভাগ)। এর আকার হয় ৭ দশমিক ১৪ থেকে ১০ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। গড় ওজন হয় ২৫০ গ্রাম। বাইরে অমসৃণ ও পাকা অবস্থায় হলুদাভ সবুজ এ পেয়ারার শাঁস সাদা। ফল পাওয়া যায় কমবেশি বছরজুড়েই। তবে ফল বেশি আহরণ করা যায় সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এ পেয়ারার সংরক্ষণ করা যায় ৮-১০ দিন।
সূত্র আরো জানায়, বারি পেয়ারা ৪-এর গাছ সব ধরনের মাটিতেই লাগানো যায়। তবে জৈবগুণসমৃদ্ধ দোআঁশ ও ভারী এঁটেল মাটিতে এ পেয়ারার ফলন ভালো হয়। জাতটি সাধারণত চার-পাঁচ বছরের মধ্যেই ফলন দেয়া শুরু করে। গাছে ফুল আসে এপ্রিল-মে ও জুন-জুলাইয়ে। এছাড়া অক্টোবর-নভেম্বরেও কিছু ফুল আসে। ফল সংগ্রহ করা যায় ফুল আসার তিন-চার মাসের মধ্যেই। তিন বছরের একটি কলমের গাছে ফল পাওয়া যায় ৭০-৮০ কেজি। এ হিসাবে হেক্টরপ্রতি ফলন হয় ৪০-৫০ টন।
পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র রাইখালীর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহিদুল ইসলাম বলেন, বারি পেয়ারা ৪-এ রোগবালাই ও পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব কম। আমরা মনে করি, দেশে পেয়ারা চাষে জাতটি বিপ্লব ঘটাবে।
কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. আলতাফ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, বারি পেয়ারা ৪ আকারে বড়, রোগ ও পোকামাকড়সহিষ্ণু। উচ্চফলনশীল ও সুস্বাদু এ পেয়ারার ফল পাওয়া যায় প্রায় সারা বছর। জাতটি পার্বত্য এলাকাসহ সারা দেশেই চাষের উপযোগী। এ পর্যন্ত রাইখালীর কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বারি পেয়ারা ৪-এর ১ হাজার ২০০ মাতৃগাছ বিতরণ করা হয়েছে।
রাইখালী কৃষক আবদুল হামিদ ও দুলাল মিয়া বলেন, বিভিন্ন রকম ফলের কথা শুনলেও তারা বীজবিহীন পেয়ারার কথা প্রথম শুনলেন