ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে পুরো পরিবার রাজপথে

‘পুলিশ আংকেল ওদের মেরো না’

সাড়ে চার বছরের মারিয়া রুশদা। পড়াশোনা করে রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলের নার্সারিতে।

সাড়ে চার বছরের মারিয়া রুশদা। পড়াশোনা করে রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলের নার্সারিতে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে গতকাল বিকালে তাকে দেখা গেল প্ল্যাকার্ড হাতে। তাতে লেখা ছিল—‘পুলিশ আংকেল ওদের মেরো না’। মূলত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসে ছোট্ট শিশুটি। পৃথক পৃথক বার্তা নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার বাবা-মা, বড় বোন ও খালা। 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরিবারের সদস্যরা জানান, এ দেশের মানুষের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রসমাজ। ঝরিয়েছে বুকের তাজা রক্ত। আজ তাদের অধিকার পেতে কেন গুলি খেতে হয়? তাদের অধিকার আদায়ে আমাদের সবারই রাস্তায় নেমে আসা উচিত। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না। শুধু বিবেকের দংশনে রাস্তায় নেমেছি, প্রতিবাদ করছি। 

মারিয়ার বাবা রিয়াজ উদ্দীন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ করতে চাইনি। ঘরেই থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিবেকের তাড়নায় আর পারলাম না। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তারা আন্দোলন করছে। মেধাহীন রাষ্ট্র বানানোর বিপক্ষে তাদের যে যৌক্তিক দাবি, তা তুলে ধরার জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে। কিন্তু তাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হলো। তাদের কোনো অপরাধ ছিল না। তারা পিকেটিং করেনি। তার পরও নিরস্ত্র ছাত্রদের কীভাবে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হলো?’

রিয়াজ উদ্দীন আরো বলেন, ‘এর (হত্যা) প্রতিবাদ শুধু প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হয় না। তার পরও দুর্বল এ প্রতিবাদই জানাচ্ছি। মানুষের মধ্যে একটা সচেতনতা দরকার। আমাদের বোঝা দরকার, কোন দেশে আমরা বসবাস করছি। আমাদের পুলিশ এখনো কেন পরিবর্তন হয়নি। তাদের চরিত্র আগের মতোই রয়ে গেছে। পুলিশ হলো সেবক, পেটোয়া বাহিনী কিংবা হত্যাকারী নয়।’

আরও