মান্ডা খালে ময়লার স্তূপ, দুর্গন্ধে দুর্ভোগ চার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের

মান্ডা ব্রিজ থেকে উত্তর দিকে কিছু দূর এগিয়ে গেলে দেখা যায়, খালে ময়লার স্তূপ। আরেকটু এগিয়ে গেলে সুখনগর ব্রিজ। সেখানে এসে বিকালে সময় কাটান অনেক মানুষ। সেখানেও একই দৃশ্য। ককশিট, প্লাস্টিক ও পলিথিনসহ নানা বর্জ্য পড়ে রয়েছে খালে। স্থির হয়ে থাকা এসব ময়লা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে অতিষ্ঠ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫, ৬, ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এছাড়া মান্ডা খালের পানির দুর্গন্ধে দুর্ভোগে রয়েছেন খালপাড়ের অন্যান্য ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও।

মান্ডা ব্রিজ থেকে উত্তর দিকে কিছু দূর এগিয়ে গেলে দেখা যায়, খালে ময়লার স্তূপ। আরেকটু এগিয়ে গেলে সুখনগর ব্রিজ। সেখানে এসে বিকালে সময় কাটান অনেক মানুষ। সেখানেও একই দৃশ্য। ককশিট, প্লাস্টিক ও পলিথিনসহ নানা বর্জ্য পড়ে রয়েছে খালে। স্থির হয়ে থাকা এসব ময়লা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে অতিষ্ঠ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫, ৬, ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এছাড়া মান্ডা খালের পানির দুর্গন্ধে দুর্ভোগে রয়েছেন খালপাড়ের অন্যান্য ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও।

৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানায় সুখনগর ব্রিজে কথা হয় সেখানকার বাসিন্দা শাহেদের সঙ্গে। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যে পরিমাণ ময়লা স্তূপ হয়ে আছে, এটাকে খাল না বলে ময়লার ভাগাড় বলা যায়। বছরের পর বছর ধরে এই পরিবেশ! সিটি করপোরেশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

৬ ও ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানায় মান্ডা ব্রিজ। ব্রিজের নিচ দিয়ে খালটি দক্ষিণে মানিকনগর, উত্তরে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হক সোসাইটির দিকে গিয়ে জিরানি খালে মিশেছে। তার আগে সুখনগর ব্রিজের নিচ দিয়ে পশ্চিম দিকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড হয়ে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে মিশেছে। একই ব্রিজ থেকে খালটি পশ্চিম দিকে ৭২ নম্বর ওয়ার্ড হয়ে ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের বেগুনবাড়ি হয়ে গ্রিনমডেল টাউনের দিকের মান্ডা খাল অংশে মিশেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মান্ডা ব্রিজের নিচে খালে প্রতিদিন ফুটপাতের দোকানদাররা ময়লা ফেলছেন। এই বিষয়ে ৭১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খাইরুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘খাল পরিষ্কারের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা শুধু অনুরোধ করতে পারি। সিটি করপোরেশন প্রকল্প নিয়েছে। গ্রিন মডেল টাউন সংলগ্ন শাপলা সিটি অংশ থেকে কাজ শুরু হয়েছে।’

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, মান্ডা খালটি মতিঝিল, বাংলাদেশ ব্যাংক, টিটি-পাড়া, মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা, নন্দীপাড়া ও ত্রিমোহনী এলাকা হয়ে বালু নদীতে পড়েছে। বালু নদী থেকে গিয়ে পড়েছে শীতলক্ষ্যায়।

বিভিন্ন জায়গায় এই খালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কদমতলী খাল, বাসাবো খাল, জিরানি খাল, নন্দীপাড়া খাল। ঢাকা জেলা প্রশাসকের দেয়া তথ্য মতে, মান্ডা খালের দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার আর প্রস্থ ৩০ থেকে ৮০ ফুট।

সরেজমিন দেখা যায়, ময়লা জমতে জমতে ভরাট হয়েছে খাল। দীর্ঘদিন ধরে খালটি পরিষ্কার না করায় খালের বিভিন্ন অংশে শ্যাওলাসহ ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে রাস্তা হয়ে গেছে। নিচে পানির প্রবাহ, ওপরে ময়লার স্তূপ পড়েছে। খালটিকে একটি ডাস্টবিন মনে হয়। হঠাৎ করে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না এটা একটা খাল। পানিতে বাড়ছে দুর্গন্ধ। বাড়ছে মশা-মাছির উৎপাত। ফলে এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

খালের দুই পাশের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন গৃহস্থালির আবর্জনাসহ যাবতীয় পরিত্যক্ত আসবাবপত্র এই খালে নিক্ষেপ করা হয়।

৭২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল আলম শামীম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গত মাস থেকে ময়লা পরিষ্কারের কাজ সিটি করপোরেশন শুরু করেছে। তবে, খালে ময়লার স্তূপের কারণে এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয় না।’

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, এই খাল শীতলক্ষ্যা নদীতে মিশেছে। এক সময় এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করত। দয়াগঞ্জ, জিঞ্জিরা হয়ে বড় বড় নৌকা শীতলক্ষ্যা নদীতে চলে যেত। আমরা এই খাল দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যেতাম, মাছ ধরেছি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে খালটি নর্দমায় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয়নি।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার মানিকনগর, সেগুনবাগিচা, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কমলাপুর, মতিঝিল, টিটিপাড়া, মুগদা, ঝিলপাড়, বালুরমাঠ ও মান্ডা এলাকার একমাত্র পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম মান্ডা খাল।

আরও