ফেনীর ৪ উপজেলা প্লাবিত, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন পুরো জেলার

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে ফেনী শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজীতে এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। এমন অবস্থায় পুরা জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা-উপজেলার সড়ক যোগাযোগও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে৷ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে ফেনী শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজীতে এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। এমন অবস্থায় পুরা জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা-উপজেলার সড়ক যোগাযোগও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে৷ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়াএ তিন উপজেলায় টানা বৃষ্টির পানির পাশাপাশি মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী হয়ে নেমে আসা পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিন উপজেলার শতাধিক গ্রামে বন্যার পানি বিপৎসীমার ১০ থেকে ১২ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাড়িঘরের চালা ও ছাদ পর্যন্ত ডুবে গিয়েছে কোথাও কোথাও। এসব এলাকার অন্তত লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

মঙ্গলবার রাত থেকেই এসব এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবকরা স্পিডবোট ও নৌকা দিয়ে লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

দুর্গত এলাকাগুলোতে সুপেয় পানি ও খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

পরশুরামের চিলথলিয়া এলাকার আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, রাত এগারোটার দিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘরের ছাদে আশ্রয় নেই। কিন্তু রাত একটার দিকে ঘরের ছাদও পানির নিচে তলিয়ে যায়। এমন অবস্থায় আতঙ্কে সবাই চিৎকার করতে থাকি। পরে বুধবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে যাই। 

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ মেম্বাররা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। যার কারণে প্রশাসনিক আন্তরিকতা সত্ত্বেও উদ্ধার কার্যক্রমে গতি পাওয়া যায়নি।  

ফেনী আবহাওয়া অফিসের বেলুন পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বুধবার রাত পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। 

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮৭ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীরক্ষা বাঁধের ১৭টি স্থান ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে গিয়েছে। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে পানি গড়িয়ে লোকালয়ে ঢুকছে। বৃষ্টি না কমলে বন্যা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, বুধবার রাত পর্যন্ত সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক দল উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

আরও