চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত বুধবার রাত ১২টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১৭ জন রোগী। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ১১০ ও গতকাল দুপুরে আরো সাতজন রোগী ভর্তি হয়।
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ১৮। একসঙ্গে অধিকসংখ্যক রোগী ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা নবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের দারিয়াপুর, হরিপুর, নামোনিমগাছী ও উপর রাজারামপুর এলাকার বাসিন্দা। আক্রান্তদের অধিকাংশই নারী।
অন্যদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়ায় ওইসব এলাকায় মেডিকেল ও টেকনিক্যাল টিম পাঠিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পৌরসভার পানির নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। তবে গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
গতকাল দুপুরে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আসন সংখ্য কম থাকায় অধিকাংশ রোগীকেই মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এছাড়া একসঙ্গে এত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। রোগীদের অভিযোগ, বেড না পাওয়ায় মেঝেতে অনেক কষ্ট করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন না থাকায় বাইরে থেকে বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে।
এদিকে সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ডায়রিয়া নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। সুষ্ঠুভাবে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। কলেরা স্যালাইনের কিছুটা সংকট রয়েছে। তবে তা কাটিয়ে উঠতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানি পান করায় বাসিন্দারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে আমরা ধারণা করছি। ডায়রিয়ার কারণ অনুসন্ধানে পানির নমুনা এরই মধ্যে পরীক্ষার জন্য রাজশাহী পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দাদের পানি ফুটিয়ে পান করতে বলা হয়েছে। এছাড়া কারো পক্ষে যদি পানি ফুটিয়ে পান করা সম্ভব না হয়, তাহলে আমরা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করব।
পৌর মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, পানির পাইপলাইন পরীক্ষার জন্য তিনটি টিম মাঠে কাজ শুরু করেছে। আক্রান্ত এলাকার পানি পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। মাইকিং করে পানি ফুটিয়ে পান করার জন্য বাসিন্দাদের বলা হয়েছে। আক্রান্ত এলাকার দুটি বাড়িতে সাপ্লাই লাইনে লিকেজ পাওয়া গেছে, যা এরই মধ্যে সারানো হয়েছে। এছাড়া ৪ থেকে ৮ নং ওয়ার্ড পর্যন্ত যে তিনটি গভীর নলকূপ রয়েছে, সেগুলোর পাশের রিজার্ভ পানির ট্যাংকগুলোয় বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব।