চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চল

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন লাখ চাষীকে প্রণোদনা দেবে সরকার

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চল। সাম্প্রতিক বন্যায় এ অঞ্চলে ফসলের ক্ষতি প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আউশ, শীতকালীন সবজি ও বোরো উৎপাদন বাড়াতে প্রায় ৭৬ কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ক্ষতিগ্রস্ত জেলার প্রায় তিন লাখ কৃষককে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে। এছাড়া কৃষকদের সার, বীজ ও কীটনাশক দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের কিছু অংশে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে এ এলাকার আউশ আবাদ ও সবজি চাষে বড় ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে এ অঞ্চলের কৃষককে নতুন করে চাষাবাদ শুরু করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া নতুন করে কৃষক টাকা খরচ করে চাষাবাদ করবেন, সে পরিস্থিতিও নেই। এ কারণে কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

প্রথম প্যাকেজে শীতকালীন সবজির জন্য ১৪ কোটি টাকার প্রণোদনা দিচ্ছে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, কক্সবাজারে ৭৬ লাখ ১৫ হাজার, নোয়াখালীতে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৭৫ হাজার, ফেনীতে ৩ কোটি ৫০ লাখ ২৯ হাজার এবং লক্ষ্মীপুরে ৩ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজারসহ ১৪ কোটি ১ রাখ ১০ হাজার টাকার প্রণোদনা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় প্যাকেজে বীজ, সার ও চারা বিতরণের অংশ হিসেবে ১ লাখ ৮৫ হাজার কৃষককে ৫৯ কোটি ৫৭ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৪৭ হাজার কৃষককে ১৫ কোটি ১৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা দেয়া হবে। এছাড়া কক্সবাজারে ১২ হাজার কৃষক পাবেন ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা। নোয়াখালীতে ৪৫ হাজার কৃষককে ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেয়া হবে। ফেনীর ৪৩ হাজার কৃষক পাবেন ১৩ কোটি ৮৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। লক্ষ্মীপুরের ৩৮ হাজার কৃষককে ১২ কোটি ২৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তৃতীয় প্যাকেজে বীজ ও সারের জন্য কক্সবাজার এবং লক্ষ্মীপুর জেলার ১৪ হাজার কৃষকের জন্য ২ কোটি ৩৯ লাখ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় ৮ হাজার কৃষককে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং লক্ষ্মীপুরের ছয় হাজার কৃষককে ১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ প্যাকেজে ১ হাজার টাকা, বীজ সারসহ অন্যান্য সহায়তা মিলিয়ে ১ হাজার ৭০৮ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাং নাছির উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বন্যায় ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক জায়গার বন্যার পনি এখনো পুরোপুরি নামেনি। তাছাড়া আউশে বড় ধরনের ক্ষতির পাশাপাশি সবজিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সামনে রবি মৌসুমের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি ব্যাপক আকারে উৎপাদনে যাতে কোনো সংকট না হয়, এজন্য প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। নতুন আরো বরাদ্দ আসতে পারে। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ের কৃষককে ফসল উৎপাদনে যেকোনো পরামর্শ, সাহায্য, সহযোগিতার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

আরও