ছয় হাজার কোটি টাকার শীর্ষ ঋণখেলাপি

নূরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ রতন গ্রেফতার

দেশের শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপী চট্টগ্রামভিত্তিক নূরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জহির আহমেদ রতন গ্রেফতার হয়েছেন। একাধিক মামলার পরোয়ানা নিয়ে পলাতক থাকার পর চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা পুলিশের অভিযান দল বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে রতনকে গ্রেফতার করে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী ও ঋণখেলাপী এই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হচ্ছে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপী চট্টগ্রামভিত্তিক নূরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জহির আহমেদ রতন গ্রেফতার হয়েছেন। একাধিক মামলাপরোয়ানা নিয়ে পলাতক থাকার পর চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা পুলিশের অভিযান দল বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে রতনকে গ্রেফতার করে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী ও ঋণখেলাপী এই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হচ্ছে।

কোতোয়ালী থানা ও চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী জহির আহমেদ রতন খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যেরে ব্যবসা করতেন। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নূরজাহান গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামে অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক সহ ১২-১৫টি ব্যাংক থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে গম, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি করে। ২০১০-১১ মৌসুমে দেশের শীর্ষস্থানীয় গম ও ভোজ্যতেল আমদানিকারক হিসেবে আলোচনায় আসেন জহির আহমেদ রতন। এরপরই ব্যাংকগুলোও গ্রুপটিকে উদারহস্তে ঋণ দিতে থাকে।

ওই সময়ে চট্টগ্রামের সাগরিকা শিল্প এলাকায় জমি কিনে সেখানে দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানাও স্থাপন করে নূরজাহান গ্রুপ। পণ্য আমদানির পর ব্যাংকের দায় পরিশোধ না করে একের পর এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, জমি ক্রয়, ভোগবিলাসসহ বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন গ্রুপটির কর্ণধাররা। ব্যাংকগুলো পাওনা আদায়ে অন্তত ৩০টি মামলা দায়ের করেছেন জহির আহমেদ রতনের বিরুদ্ধে। অর্থঋণ আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টসহ দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছেন।

জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়েদুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, নূরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ রতনকে কোতোয়ালী থানার একটি বিশেষ টিম গ্রেফতার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে শীর্ষ এই ঋণখেলাপিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হচ্ছে।’

অর্থঋণ আদালত ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্য আমদানির আড়ালে পাচার ছাড়াও নামে-বেনামে সম্পদ ক্রয়, বিভিন্ন নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় সংসদে তালিকাভুক্ত দেশের শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় নাম লিখিয়েছেন জহির আহমেদ রতন। এর আগে ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে নূরজাহান গ্রুপের পরিচালক ও জহির আহমেদ রতনের ছোট ভাই টিপু সুলতানকে গ্রেফতার করেছিল চট্টগ্রামের খুলশি থানা পুলিশ। টিপু সুলতানের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ব্যাংকের ২০টি মামলায় অন্তত ১৭টিতে সাজা রয়েছে।

কোতোয়ালী থানা পুলিশের অভিযান দলের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বণিক বার্তাকে জানান, ‘‌গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার বিশেষ টিম গিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপী জহির আহমেদ রতনকে গ্রেফতার করেছে। আমরা তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসছি। এ বিষয়ে সিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং দেবেন।’

আরও