কসবায় চারা সংকটে আমন আবাদ করতে পারছেন না কৃষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খেতে আবার রোপা আমনের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন কৃষক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খেতে আবার রোপা আমনের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন কৃষক। চারা সংকটে নতুন করে আমন চাষ করতে পারছেন না অনেকে। আবার কোথাও চারার দাম বেশি হওয়ায় আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক।

উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক সালাম মিয়া বলেন, ‘পাঁচ কানি জমির আমন খেত ছয়দিন পর্যন্ত পানিতে নিমজ্জিত ছিল। প্রায় ৯০ শতাংশ চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন করে আমনের চারা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। কিন্তু এখনো কোথাও তা পাইনি। যদি আমনের চারা পাই তাহলে আবার ধান ফলাতে পারব। চারা না পেলে এ বছর জমি পতিত রাখতে হবে।’

একই গ্রামে কৃষক জামাল মিয়া বলেন, ‘তিন বিঘা জমি চাষাবাদ করে যে ফসল পাই, তা দিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। কিন্তু এবারের বন্যায় পুরো জমির আমন নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নামার পর পুনরায় জমি তৈরি করেছি। কিন্তু কোথাও চারা পাচ্ছি না।’

উপজেলায় বায়েক ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর মিয়া জানান, আমন খেত নষ্ট হলেও বন্যায় সেই জমিতে পলি জমেছে। এখন ফসল আরো ভালো হবে। সেই আশায় ধারদেনা করে জমি প্রস্তুত করেছেন তিনি। কিন্তু আমনের চারা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন।

উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, এবারের বন্যায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪ হাজার ২০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৪ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে পুনরায় আমনের চাষ করতে ১৫০ হেক্টর জমির বীজতলা প্রয়োজন। কিন্তু বন্যায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো উপজেলায় আমনের চারা সংকট দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোপা আমন মৌসুমে চারা সংকট দেখা দিয়েছে। আশা করি এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ হলেও সমাধান করা যাবে। তাছাড়া কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে বেশকিছু পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। চলতি আমন মৌসুমে ১২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমন ধানের চারা সংকটের কারণে চারার চাহিদা জোগান দেয়ার জন্য কৃষক পরস্পরকে সহযোগিতা করে আসছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে প্রণোদনাও দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ছয় হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মাঝে বীজ বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় ৩০ হেক্টর বীজতলা রয়েছে।’

আরও