বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তায় সহায়তা করছে ইউএসটিডিএ

বাংলাদেশে প্রস্তুত খাদ্য ও কোল্ড চেইন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বণ্টন ফুডস লিমিটেডকে (বণ্টন ফুডস) সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ইউএসটিডিএ)। ৬ অক্টোবর এক মিডিয়া নোটে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

মিডিয়া নোটে বলা হয়, অনুদান বাংলাদেশে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হিমাগারের সরবরাহ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক স্থাপনে সহায়তা করবে। সমীক্ষার লক্ষ্য হলো—দুগ্ধজাত পণ্য, গোশত এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্যের খরচ এবং ক্ষতি কমানো, যা দেশের খাদ্যনিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে। বণ্টন ফুডস মিনেসোটাভিত্তিক ল্যান্ড ও’লেকস ভেঞ্চার৩৭-কে এ সমীক্ষা পরিচালনার জন্য নির্বাচন করেছে।

ইউএসটিডিএর পরিচালক এনোহ টি এবোং বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ সহজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বণ্টন ফুডসের সঙ্গে আমাদের এ অংশীদারত্ব মূলধন সংগ্রহে সহায়তা করবে এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজন মেটাতে উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োগ করবে। তাজা খাদ্যের প্রাপ্যতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে, আমরা তা দেখাতে পারব বলে আশাবাদী।’

মিডিয়া নোট অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৩০০টিরও বেশি স্থানে মোট ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন সক্ষমতার হিমাগার আছে। কিন্তু দেশের বর্তমান কোল্ড চেইন শিল্প চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। ফলে প্রাণিজ প্রোটিন ও শাকসবজি সাধারণত কাঁচাবাজারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে প্রায় কোনো যান্ত্রিক রেফ্রিজারেশন ব্যবস্থা নেই, যা খাদ্য নষ্ট এবং ক্ষতির কারণ হতে পারে। ইউএসটিডিএর অর্থায়নে পরিচালিত এ সমীক্ষা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তৃতীয় পক্ষের সরবরাহ ব্যবস্থায় হিমাগার সুবিধা সমন্বিত নেটওয়ার্ক নির্মাণের মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করবে।

বণ্টন ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, ‘দেশের বিশাল জনসংখ্যা—শুধু বৃহত্তর ঢাকাতেই দুই কোটি মানুষ। বাড়তে থাকা উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং ভোক্তাদের বদলে যাওয়ার ধরন কোল্ড চেইন শিল্পের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়। আমরা ছোট ও মাঝারি কৃষি ব্যবসা, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক খাদ্য আমদানিকারক ও রফতানিকারকদের জন্য তৃতীয় পক্ষের লজিস্টিক সেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাজারে আমাদের অবস্থানকে কাজে লাগাতে আগ্রহী।’

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ বলেন, ‘বাংলাদেশে যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত সরবরাহ ব্যবস্থার অভাবে ফসল কাটার পর ক্ষতি হয়, যা খাদ্যনিরাপত্তায় প্রভাব ফেলে এবং কৃষি ও ভোক্তা পণ্যের বাণিজ্যকে সীমিত করে। কোল্ড চেইন অবকাঠামো বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনকারীদের তাদের কৃষিপণ্যের নিরাপত্তা ও মান নিশ্চিত করে রফতানিতে বৈচিত্র্য আনার সুযোগ দেবে। এ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কোল্ড চেইনে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ চিহ্নিত করবে, যা বাংলাদেশের দ্রুতবর্ধনশীল মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভোক্তা চাহিদা পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের হিমায়িত পণ্যের জন্য একটি স্থিতিশীল সরবরাহ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক তৈরি করবে।’

ইউএসটিডিএর এ সমীক্ষা বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অগ্রাধিকার যেমন ফিড দ্য ফিউচার” উদ্যোগের লক্ষ্যগুলোকে এগিয়ে নিতে সহায়ক বলে মিডিয়া নোটে উল্লেখ করেছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

আরও