২০২৩-২৪ নিলাম মৌসুম শুরু হয় চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল। চট্টগ্রামে ৪৬টি ও শ্রীমঙ্গলে ২২টি নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু মৌসুমে পর্যাপ্ত চা উৎপাদন হওয়ায় ৮টি নিলাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চা বোর্ড। এতে মৌসুমের শেষার্ধে উৎপাদিত উদ্বৃত্ত চা বিক্রির সুযোগ পাবেন বাগান মালিকরা। চা বোর্ডের টি সেলস কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত রোববার অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে ৪টি, শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে ২টি এবং পঞ্চগড় চা নিলাম কেন্দ্রে ২টি নিলাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ৩৭তম চট্টগ্রাম চা নিলাম ৯ জানুয়ারি তারিখে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান টি সেলস কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অতিরিক্ত নিলামগুলো অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ ৪৭তম নিলাম, ২৫ মার্চ ৪৮তম নিলাম, ১ এপ্রিল ৪৯তম নিলাম এবং ৭ এপ্রিল ৫০তম নিলাম। ৫০তম নিলাম রোববার অনুষ্ঠিত হবে, এছাড়া বাকি নিলামগুলো যথারীতি সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। শ্রীমঙ্গলের বাড়তি নিলামের মধ্যে ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ ২৩তম নিলাম এবং ২৭ মার্চ ২৪তম বাড়তি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। শ্রীমঙ্গলের বাড়তি দুটি নিলামই বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে প্রথমবারের মতো উত্তরবঙ্গের সমতলের ক্ষুদ্রায়তন চা চাষের জন্য বিখ্যাত পঞ্চগড়ের অনলাইন চা নিলামও বাড়ছে দুইটি। চলতি মৌসুমে ১২টি নিলাম আয়োজনের কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২০ মার্চ বুধবার ১৩তম নিলাম এবং ৩ এপ্রিল বুধবার ১৪তম নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত নিলামগুলোর জন্য ক্যাটালগ ক্লোজিং ও বায়ারদের চা সংগ্রহ তারিখও নির্ধারণ করেছে চা বোর্ড।
শ্রীমঙ্গলে মৌসুমের প্রথম নিলাম শুরু হয় চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল। এ বছরই প্রথম পঞ্চগড়ে প্রথম চায়ের নিলাম কার্যক্রম শুরু হয়। ৪ অক্টোবর উদ্বোধন হওয়া এই নিলামটি শতভাগ অনলাইন নির্ভর। বিশেষায়িত অ্যাপের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত কিংবা বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে ক্রেতারা চা ক্রয়ের অর্ডার দিতে পারবেন। চট্টগ্রাম চা নিলাম দীর্ঘদিনের পুরনো হলেও শ্রীমঙ্গলে চা নিলাম কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৪ মে। অপর দিকে চট্টগ্রামে প্রথম চায়ের আন্তর্জাতিক নিলাম শুরু হয় ১৯৪৯ সালে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ১৬৮টি চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা চাষিরা উৎপাদন করেছে ৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৩ হাজার কেজি। চলতি বছরের শেষার্ধে অপ্রত্যাশিত ভাবে নিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে মৌসুমের শেষে চায়ের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়ে গেছে। দেশের প্রতিটি নিলাম কেন্দ্রেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বাড়তি চা পাঠাচ্ছেন বাগানগুলো। চাহিদার তুলনায় বাড়তি চা সরবরাহের কারণে চায়ের দাম কমে যাওয়ার পাশাপাশি নিলামে পাঠানো চায়ের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি চা অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। এসব অবিক্রীত চা বিক্রি ও বাগানগুলো চায়ের ন্যায্য দাম পেতে এবছর রেকর্ড পরিমাণ অতিরিক্ত নিলাম আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চা বোর্ড।