চাঁদপুরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বাঁধে ভাঙন

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারি বর্ষণ ও বন্যার পানির চাপে বাঁধের ১৬টি স্থানে বড় বড় ছিদ্র ও কমপক্ষে ৪০ স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারি বর্ষণ ও বন্যার পানির চাপে বাঁধের ১৬টি স্থানে বড় বড় ছিদ্র ও কমপক্ষে ৪০ স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কে রয়েছে বাঁধের আশপাশের পাঁচ লাখ মানুষ। পুরো বাঁধে পিচঢালা সড়ক রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থান মেরামতের চেষ্টা করছে স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন।

গতকাল সরজমিনে দেখা গেছে, সুগন্ধি, শিকিরচর, দশানী, সিপাহীকান্দি, গালিম খাঁ বাজার, কালীপুর, বাগানবাড়ী, ধনাগোদা, তালতলী, এনায়েতনগর, ফরাজীকান্দি, রায়েরকান্দি, নবীপুর, লালপুর ও গোপালকান্দি এলাকায় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো দিয়ে পানি চুইয়ে বাঁধের ভেতরে প্রবেশ করছে।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৬০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে নির্মিত বাঁধে অর্থায়ন করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। বাঁধের আশপাশে প্রায় ৩২ হাজার ১১০ একর ফসলি জমি রয়েছে। নির্মাণের পর এ পর্যন্ত দুবার বাঁধটি ভেঙে যায়। এতে কয়েকশ কোটি টাকার ফসল ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল।

সিপাহীকান্দি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বর্ষা শুরুর পর থেকে টানা বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে মূল বাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো মেরামতে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়ায় এসব গর্ত ক্রমে বড় হয়েছে। বাঁধও পড়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে।

ফরাজীকান্দি গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে পড়লেও সেটি মেরামত করার কেউ নেই। বাঁধ ভেঙে গেলে সব ফসল তলিয়ে যাবে।’

বাগানবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘কালীপুর বাজার পর্যন্ত বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো স্থানীয়ভাবে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না পাউবো কর্তৃপক্ষ।’

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল বলেন, ‘ভারি বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে বাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।’

সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবহারকারী দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী খোকন বলেন, ‘বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে এলাকার লোকজন রাত-দিন পাহারা দিচ্ছে। কোথাও নতুন করে গর্ত সৃষ্টি হলে সেটি মেরামতের জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। পাউবোর দায়িত্বহীনতার কারণে বাঁধের কয়েকটি অংশ ঝুঁকিতে পড়েছে।’

আরও