বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে ১৯৮৭ সালে দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৮ হাজার ১১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। তবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদান হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের প্রায় ৪৩ শতাংশই পড়ছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বহির্ভূত (নন-স্টেম) বিষয়ে। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৬৬৬ জন শিক্ষার্থী পড়ছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এবং ৮১৮ জন পড়ছেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ-বহির্ভূত মোট নয়টি বিভাগ রয়েছে—বাংলা, ইংরেজি, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন, পলিটিক্যাল স্টাডিজ ও অর্থনীতি। এসব বিভাগে শিক্ষক আছেন ১৮৫ জন।
শুধু শাবিপ্রবি নয়, একই পরিস্থিতি দেশের ১৩টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টিতেই। শুধু পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বহির্ভূত কোনো অনুষদ নেই। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মোট শিক্ষার্থীর এক-তৃতীয়াংশের বেশিই পড়ছেন মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে। অথচ এসব বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতসংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাদান ও গবেষণাকে প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি চার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব নির্দেশনা সংবলিত চিঠি মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতসংশ্লিষ্ট সাধারণ বিষয় (STEM Subject) ছাড়া অন্য কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এরই মধ্যে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বিষয়ের বাইরে অন্য বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান, তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সীমিত অথবা বন্ধ করতে হবে।
অনেক শিক্ষাবিদ বলছেন, বিগত সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব উপাচার্য দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বেশির ভাগ নিয়োগ দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে জড়িয়েছেন। বিভাগের সংখ্যা বৃদ্ধি করে নতুন লোকবল নিয়োগের সুযোগ তৈরির জন্য তারা অপরিকল্পিতভাবে অনেক অপ্রয়োজনীয় বিভাগ চালু করেছেন। তবে রাতারাতি এসব বিভাগ বন্ধের নির্দেশনাও সমস্যার যৌক্তিক সমাধান বলে মনে করছেন না তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘দেশে এত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কতটা প্রয়োজনীয় সেটিই একটি বড় প্রশ্ন। বিগত সরকার মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। উপাচার্যদেরও নিয়োগ দেয়া হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। স্বাভাবিকভাবে তারা বেশি বেশি দলীয় লোক নিয়োগ দিতে গিয়ে নতুন অনেক বিভাগ চালু করেছিলেন, যেগুলো হয়তো ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তৎকালীন সরকার তাদের এসব কাজকে বৈধতা দিয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয় অধিক গুরুত্ব পাবে এটিই স্বাভাবিক। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এরই মধ্যে এসব বিষয় চালু রয়েছে তাদের রাতারাতি বন্ধের নির্দেশনা দেয়া কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নয়। যদি শুরু থেকে এ বিষয়টি অনুসরণ করা যেত তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। এখন যেহেতু এসব বিষয় চালু আছে, তাই তাদের নিয়ে কীভাবে সামনে আগানো যায় তা ভাবতে হবে। মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা কিংবা আইন অনুষদভুক্ত বিষয়েও আমাদের দক্ষ গ্র্যাজুয়েট দরকার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন কোনো বিভাগ অনুমোদনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোয় গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে।’
ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ১৩টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৬০ হাজার ১৫৫ জন। তাদের মধ্যে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অধ্যয়ন করছেন ২১ হাজার ৩৯৭ জন, যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৩৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এসব অনুষদে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ হাজার ৪৩৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ৪০৬ জনই পড়ছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বহির্ভূত বিষয়ে, যা মোট শিক্ষার্থীর ৪৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। এছাড়া রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বিভাগে ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি বিভাগে ৪৩ দশমিক ৭০ শতাংশ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২টি বিভাগে ৪৩ দশমিক ৪০ শতাংশ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়টি বিভাগে ৪২ দশমিক ৯০ শতাংশ, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ বিভাগে ৩০ দশমিক ৫২ শতাংশ, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বিভাগে ২৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি বিভাগে ২১ দশমিক ৬৪ শতাংশ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি বিভাগে ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি বিভাগে ১৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অধ্যয়নরত।
এসব বিভাগের অনুমোদন, ডিগ্রির নাম পরিবর্তন নিয়ে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের ঘটনাও ঘটেছে। ২০২৩ সালে ডিগ্রির নাম পরিবর্তনের দাবিতে টানা তিন মাস আন্দোলন করেছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ (বিএমএস) বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, সাবেক উপাচার্য ড. এম অহিদুজ্জামান সরকারের কাছে নিজের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরিতে এ বিভাগটি চালু করেছিলেন। তবে এ বিভাগ দেশে নতুন হওয়ায় চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ১২টি বিভাগ মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সাবেক উপাচার্য ড. এম অহিদুজ্জামান সরকারের সময়ে শিক্ষা প্রশাসন নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি বিভাগ চালু করা হয়। দেশের অন্য কোথাও এ বিভাগ চালু না থাকায় এ বিভাগেও শিক্ষক নিয়োগসহ নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়টির সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের এক শিক্ষক বলেন, ‘সাবেক উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ছিলেন। উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর তিনি শিক্ষা বিজ্ঞান নামে একটি অনুষদ চালু করেন এবং ওই অনুষদে শিক্ষা বিভাগ ও শিক্ষা প্রশাসন নামে দুটো পৃথক বিভাগ চালু করেন। দুটো বিভাগের কাজ একই। মূলত অধিকসংখ্যক পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতেই তিনি দুটো পৃথক বিভাগ চালু করেছিলেন। এছাড়া তার স্ত্রী ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। ভিসি হিসেবে যোগদানের পর তিনি সমাজবিজ্ঞানের পাশাপাশি সমাজকর্ম বিভাগও চালু করেন। এক্ষেত্রেও তার মূল উদ্দেশ্য ছিল নিয়োগ বাণিজ্য। ওই সময় এসব বিষয় নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল।’
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বিষয় পড়ানোই অধিক যৌক্তিক। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এর বাইরে বেশকিছু বিভাগ চালু আছে। মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর আমরা একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান তৈরির একটি কমিটি করেছি। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আমরা এসব বিভাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
ইউজিসির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগ চালু করেছিল গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। পরে ২০২০ সাল থেকে অনুমোদনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ২০২৪ সালে বিভাগটির অনুমোদন দেয় ইউজিসি।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩৩টি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি বিভাগ কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত। মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৩ এপ্রিল ছুটি শেষ হওয়ার পর আলোচনা করবে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্টেম বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই প্রযুক্তিগত শিক্ষার উন্নয়ন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশলসংশ্লিষ্ট বিষয়েরই গুরুত্ব থাকা উচিত, অন্যথায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো পার্থক্য থাকবে না। তবে তার মানে এই নয় যে নন-স্টেম বিষয় পড়ানোই যাবে না বা সব নন-স্টেম বিভাগ বন্ধ করে দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে একটি নির্ধারিত সীমা থাকা উচিত। সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী এসব বিষয়ে পড়তে পারে কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি এক-তৃতীয়াংশ বা প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী নন-স্টেম বিভাগের হয় সেটি কাম্য নয়।’
এদিকে মন্ত্রণালয় চিঠি দিলেও নোবিপ্রবি ব্যতীত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বলছেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এরই মধ্যে এ ধরনের বিষয় চালু আছে, সেগুলো বন্ধ করা চ্যালেঞ্জিং হবে। এ সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হতে পারেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মো. সাজেদুল করিম বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশলসংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসা অনুষদ সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স পড়ানো হয়। এসব কোর্স পড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ শিক্ষক প্রয়োজন হয় এবং সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের বিভাগগুলো চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ আমাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশলের বিভাগগুলোর কোর্স কারিকুলামের সঙ্গেই এসব বিষয় সংশ্লিষ্ট। এ কারণে মন্ত্রণালয়ে চিঠিটি আমাদের জন্য ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনোটিই মনে করছি না। আর যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত শিক্ষা পদ্ধতি অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে এ বিভাগগুলো প্রয়োজন, সেহেতু এ বিষয়ে তেমন কিছু করণীয় আছে বলেও মনে হয় না।’
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে আরেকটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা যদি সিদ্ধান্ত নিতে যাই তবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এবং শতাধিক শিক্ষক ক্ষুব্ধ হবেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। তবে আমরা বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা সীমিতকরণের চিন্তাভাবনা করছি। এছাড়া কয়েকটি বিভাগকে অন্য বিভাগের সঙ্গে মার্জ (একীভূত) করা যায় কিনা সে বিষয়েও চিন্তভাবনা করছি।’
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখভালের দায়িত্ব ইউজিসির। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো ইউজিসির সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দিন খান।
এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।