একদিকে প্রযুক্তি নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে, অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী অসহিষ্ণুতা, উগ্রজাতীয়তাবাদ ও সংকীর্ণতা বড় অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তরুণদের মেধা, শ্রম ও দক্ষতা দিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, সহিষ্ণু ও ন্যায়ের পৃথিবী গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন ও শিক্ষার্থীদের হাতে ডিগ্রি তুলে দেন।
এ বছর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে মোট ২ হাজার ৮৮৫ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেয়া হয়। পাশাপাশি অনন্য মেধাবী ৬ শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এখন খবরদারির জায়গা থেকে সহযোগিতার জায়গায় চলে এসেছে। এছাড়া সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের তিনি পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেন।
সমাবর্তন বক্তা ও এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, আগামী ২৫-৩০ বছর পরের বাংলাদেশ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে তোমাদের ওপর। তিনি চাকরির চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, যেকোনো উদ্যোগ শুরু করার আগে একদম নিচ থেকে কাজটা শিখে নিতে হবে, নাহলে লোকসান হবে। তিনি জানান, ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান দিয়েও দেশের জিডিপিতে বড় অবদান রাখা সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, একটি উচ্চ মানের শিক্ষা কমিশন গঠনের সময় এসেছে। তিনি আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক ও উদ্ভাবনী শিক্ষানীতি প্রণয়নের দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সম্পদ কাজে লাগিয়ে পণ্য ও সেবা উৎপাদনে মনোযোগী হতে হবে। আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান বলেন, জনশক্তিকে সম্পদে রূপান্তরের জন্য প্রযুক্তি ও ভাষাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রচলিত কাঠামোর বাইরে গিয়ে সৃজনশীল কিছু করার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাজীবনের শেষে সময়মতো ডিগ্রি পেয়ে সমাবর্তনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।