বাণিজ্য উপদেষ্টা

শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা জানি এ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই ৯০ দিনের মধ্যে আমাদের কার্যক্রম কী হবে, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজে সচেতন। আমাদের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য রয়েছে বিশেষ করে রফতানি বেশি আমদানি কম, এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম ক্রেতা হিসেবে একক বৃহত্তম দেশ। সেজন্য আমাদের কাছে বিষয়টি চিন্তার। যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের বাণিজ্য ঘাটতি নিরূপণ করছে, সেটা পণ্যের ক্ষেত্রে করছে, সেবার ক্ষেত্রে না। এজন্য আমরা কিছু কর্মসমষ্টি তৈরি করেছি।

বাংলাদেশী পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং সরকারের করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের একটি সরকারি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। প্রতিনিধিদলে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বাণিজ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকবেন বলেও জানান তিনি।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ: চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এসব তথ্য জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা জানি এ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই ৯০ দিনের মধ্যে আমাদের কার্যক্রম কী হবে, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজে সচেতন। আমাদের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য রয়েছে বিশেষ করে রফতানি বেশি আমদানি কম, এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম ক্রেতা হিসেবে একক বৃহত্তম দেশ। সেজন্য আমাদের কাছে বিষয়টি চিন্তার। যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের বাণিজ্য ঘাটতি নিরূপণ করছে, সেটা পণ্যের ক্ষেত্রে করছে, সেবার ক্ষেত্রে না। এজন্য আমরা কিছু কর্মসমষ্টি তৈরি করেছি।

তিনি বলেন, এ কর্মসমষ্টি নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিবসহ একটি প্রতিনিধিদল আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। সেখানে ইউএসটিআর রয়েছে, যারা এই শুল্ক নিয়ে কাজ করেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ কাঠামোর মাধ্যমে আমরা আরো নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করব।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ২.২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্য অন্যান্য দেশ থেকে আমাদের দেশে আসে। এছাড়া আমাদের কিছু পণ্য আছে যা দুই দেশকেই সুবিধা দেয়। সেসব পণ্যের শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারি। একই সঙ্গে আমাদের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন রকমের অবকাঠামোগত চিন্তা করছি। যেখানে আমাদের পণ্যের মান, গ্রহণযোগ্যতা ও বাণিজ্য বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের প্রতিনিধিদল আলোচনা করে আসার পর আমি নিজেই যাব। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে সুস্পষ্ট প্রস্তাব রাখব।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক পরিশোধ করে ব্যবসা করি। আমাদের রফতানির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ১ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে শূন্য শুল্কের পণ্য আমদানি করে সেটা পুনরায় রফতানি করি। সেজন্য আমরা আমাদের প্রতিবন্ধকতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কারণ আমাদের নিজস্ব অর্থনীতির সক্ষমতার বাইরে যেতে পারব না। আবার সামগ্রিক অর্থনীতির সমস্যা তৈরি হয়েছিল ফ্যাসিস্ট শাসনামলে, ভুল অর্থনৈতিক নীতির কারণে। আমরা অবশ্যই সে ধরনের নীতিতে যাব না। আমাদের অর্থনীতির সক্ষমতা, বাণিজ্যের সম্ভবনা, এ দুটিকে একসঙ্গে কাজে লাগিয়ে, সর্বোপরি প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মেনে নিয়ে আমরা এ সমস্যার সমাধান করব।

আরও