সাতক্ষীরায় সূর্যমুখীর আবাদ কমেছে

উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য সূর্যমুখী লাভজনক ও সম্ভাবনাময় একটি ফসল। কারণ এটি মাটির লবণাক্তা সহ্য করতে পারে। দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সাতক্ষীরায় চাষ করা হচ্ছে তেলজাতীয় এ ফসলটি। তবে সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল উৎপাদনে প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে আবাদ কিছুটা কমেছে। চলতি রবি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ১৩৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী

উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য সূর্যমুখী লাভজনক ও সম্ভাবনাময় একটি ফসল। কারণ এটি মাটির লবণাক্তা সহ্য করতে পারে। দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সাতক্ষীরায় চাষ করা হচ্ছে তেলজাতীয় এ ফসলটি। তবে সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল উৎপাদনে প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে আবাদ কিছুটা কমেছে। চলতি রবি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ১৩৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর। আগের মৌসুমে চাষ হয় ১৪৯ হেক্টর জমিতে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, উপকূলীয় এলাকায় সূর্যমুখী চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। স্বল্পসময়ের ফসল উৎপাদন করে কৃষক লাভবান হতে পারে। এ লক্ষ্যে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্প নিয়েছে কৃষি বিভাগ। প্রকল্পের অধীনে জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষককে বিনামূল্যে সূর্যমুখী বীজ ও সার দেয়া হয়েছে।

সদর উপজেলার নলকুড়া গ্রামের কৃষক ওলিউর রহমান জানান, চলতি রবি মৌসুমে তিনি এক বিঘা জমিতে হাইসান জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন। খেতের অধিকাংশ গাছেই ফুল বড় হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। প্রণোদনা হিসাবে কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়েছেন তিনি। গত মৌসুমে একই পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে ১৮ হাজার টাকা লাভ হয় তার। আগামীতে প্রণোদনার পাশাপাশি নিজে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করবেন।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১২ হেক্টর, কলারোয়ায় ৪৫, তালায় ২০, দেবহাটায় ১১, কালীগঞ্জে ১৬, আশাশুনিতে ১৭ ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৭ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। ফসলটি চাষের জন্য জেলায় ১ হাজার ৫০ প্রান্তিক কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে, যা দিয়ে প্রতি কৃষক এক বিঘা পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) বিনেরপোতার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শিমুল মণ্ডল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য সূর্যমুখী লাভজনক ও সম্ভাবনাময় একটি ফসল। বারি বা হাইসান জাতের সূর্যমুখী চাষ করে সাতক্ষীরা অঞ্চলের কৃষক লাভবান হতে পারেন। লবণাক্ততা এলাকায় সূর্যমুখী প্রতি হেক্টরে সাড়ে তিন থেকে চার টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল উৎপাদনে কিছু প্রযুক্তিগত জটিলতাও রয়েছে। সূর্যমুখী থেকে বিশুদ্ধ তেল উৎপাদন করতে যে প্রযুক্তির দরকার তা সাতক্ষীরায় নেই। যে কারণে কৃষক বীজ বিক্রি করে দেন। এতে তাদের লাভের পরিমাণটাও কমে যায়।’

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষে সম্ভাবনাময় জেলা সাতক্ষীরা। স্বল্পসময়ে বেশি লাভজনক ফসল এটি। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে তেলজাতীয় এ ফসল উৎপাদন বাড়াতে কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।’

আরও