হাইমচরে জলাবদ্ধতায় ১০০ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত

টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুরের হাইমচরে পান বরজে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পানি থাকায় প্রায় ১০০ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুরের হাইমচরে পান বরজে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পানি থাকায় প্রায় ১০০ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় অপরিপক্ব পান তুলে নিচ্ছেন চাষীরা।

তাদের অভিযোগ, সেচ প্রকল্পের কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। বৃষ্টি হলে পানি আবার বেড়ে যায়। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

উপজেলার উত্তর আলগী ইউনিয়নের মহজমপুর গ্রামের পানচাষী আবু তাহের জানান, তিনি এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে পানের বরজ করেছেন। এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় দুটি পানের বরজ। এখন শ্রমিক দিয়ে পানি নিষ্কাশন করেও লাভ হচ্ছে না।

সফিকুর রহমান বলেন, ‘পান ও সুপারি আবাদ আমাদের উপজেলার ঐতিহ্য। আমার একটি জমিতে পানের বরজ ছিল। ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমি কী করব জানি না। উপজেলার প্রায় ৭০০ কৃষকের একই অবস্থা।’

উত্তর আলগী ইউনিয়নের পানচাষী শাহজাহান বলেন, ‘কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পানের বরজ করেছি। বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। পান গাছের গোড়া পচে গেছে। পানি সরে গেলেও আর পান গাছ বাঁচবে না। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব জানি না।’

এদিকে বরজগুলোয় জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় অপরিপক্ব পান তুলে নিচ্ছেন কৃষক। আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের পানের বেপারি কাদের গাজী বলেন, ‘পান নির্দিষ্ট সময়ে বড় হলে বিক্রি করেন চাষীরা। কিন্তু দুর্যোগের কারণে এখন কিছুই করার নেই। বরজ থেকে কোনো রকম বিক্রির জন্য বিড়া সাজানো হচ্ছে। আর না হয় জমিতেই পচে যাবে। পান বড় হলে প্রতি বিড়া বিক্রি হতো ৮০-১০০ টাকা। আকারে ছোট হওয়ায় এখন প্রতি বিড়া ৩০-৫০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।’

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাকিল খন্দকার বলেন, ‘উপজেলার ১১৯ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। জলাবদ্ধতায় প্রায় ১০০ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পান চাষে যুক্ত ১ হাজার ৭২ জন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি এবং ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’

আরও