পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় পার্টি সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে সাধারণভাবে আমার মনে হয় না বিপুলসংখ্যক প্রার্থী সরে দাঁড়াবেন। বেশির ভাগ প্রার্থী যদি মনে করেন নির্বাচন ভালো হচ্ছে না, তারা নির্বাচন থেকে যদি সরে দাঁড়ান তবে আমাদের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি হবে। তখন চিন্তা করে দেখতে হবে কী করা যায়।’
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে গতকাল তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির প্রভাব কমে গেছে এটি স্বীকার করতে পারছি না। নির্বাচনের মাঠ সমতল থাকলে আমরা আশাবাদী। তবে ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাব বেড়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে এসে নির্বাচন করুক, তখন কার কত প্রভাব আছে আমরা দেখিয়ে দেব।’
নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের শঙ্কা রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত খুব বেশি খারাপ বলতে পারছি না। তবে ভোটারদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। বিগত দিনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, উপনির্বাচনে সবকিছু ভালো ছিল, মানুষ ভোটও দিয়েছে। কিন্তু ভোটের ফলাফলে আমাদের সন্দেহ ছিল। ভোট কেন্দ্র দখল, ফলাফল যেটা হওয়া উচিত ছিল সেটি হয়নি। এখন বাকিটা সামনে দেখার বিষয়। এখন পর্যন্ত তারা বলছে নির্বাচন ঠিক হবে, আগেও বলেছিল। কিছু ভরসা করেই তো নির্বাচনে আসতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছি। সাধারণভাবে আমরা জানতাম ৩০০ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো আমাদের প্রার্থী ছিল না। এখন অনেক প্রার্থী শুধু অভিজ্ঞতা ও পরিচিতির জন্য নির্বাচনে এসেছেন। অনেকে নির্বাচনে এসে অর্থ কুলাতে পারছেন না, পরিবেশ ভালো নেই, হুমকিও রয়েছে। তাই অনেকে নিজ থেকেই সরে দাঁড়াচ্ছেন। এতে আমাদের দোষ দিয়ে যাওয়া কিছুটা উদ্দেশ্যমূলক। আমাদের সন্দেহ আছে কিছু আসনে সমঝোতা কিংবা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিয়ে প্রার্থীরা সরে দাঁড়াচ্ছেন কিনা। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ, নির্বাচনের পর তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কত আসন পেতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘আসন পাওয়ার বিষয়টি আমরা হিসাব করিনি। যেহেতু নির্বাচনে একটি অনিশ্চয়তা রয়েছে। নিশ্চিতভাবে কোনো কিছু জানতে পারছি না। নির্বাচন কেমন হবে সেটাও নিশ্চিতভাবে আমরা বুঝতে পারছি না। যদিও বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য সাহায্য করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কীভাবে হয়, ফলাফল কীভাবে ঘোষণা হয় তা বোঝা যাচ্ছে না। নির্বাচন শেষে আমরা বুঝতে পারব কতগুলো সিট পেলাম।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, লোকমান হোসেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় নেতারা।