তিন পার্বত্য জেলায় প্রকল্প সংকটে এলজিইডি

তিন পার্বত্য জেলায় প্রকল্প সংকটে পড়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

তিন পার্বত্য জেলায় প্রকল্প সংকটে পড়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ৬১টি জেলায় এলজিইডির প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং ব্রিজেস (সাব-আরজি) প্রকল্প চলমান থাকলেও বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি রয়েছে প্রকল্পটির বাইরে। পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়, অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পও শেষ হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানে সড়ক নির্মাণ করা হলেও সেতুর অভাবে তা যানবাহন চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নতুন প্রকল্প না থাকায় সেতু নির্মাণ করতে পারছে না সরকারি এ দপ্তরটি।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য উপজেলা ও ইউনিয়নে গ্রামীণ সড়ক, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ করতে সরকারের উদ্যোগ রয়েছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে সরকার ও এডিবির অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায় (সিএইচটিআরডিপি-২) ২০১৭-২০২০ সময়কালে শেষ হয়েছে। এছাড়া ২০১৬-২০২১ সময়কালে শেষ হয়েছে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায় (আরআইডিপিসিএইচটি-২)। তবে এ প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানের লামা উপজেলার স্কিমগুলো চূড়ান্ত অনুমোদনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। অন্যদিকে ২০১৯-২৩ সময়কালে সরকারি অর্থায়নে তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের (ডিডিআরআইপি-২) কাজও শেষ পর্যায়ে। এরপর আর নতুন কোনো প্রকল্প নেই দপ্তরটির হাতে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, তিন পার্বত্য জেলায় নতুন সড়ক ও সেতু নির্মাণ, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কাজের দাবি ও চাহিদা রয়েছে। সেসব দাবি ও চাহিদা পূরণে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে আগেই স্কিম তৈরি করেছে এলজিইডি। কিন্তু গত দুই বছরে চাহিদা ও স্কিমগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতিই হয়নি। ৬১টি জেলায় চলমান প্রকল্পগুলোর আওতায় অন্তর্ভুক্ত না করায় দেশের সমন্বিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তিন পার্বত্য জেলা।

প্রকল্প না থাকা ও সেতু ছাড়া সড়ক নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদনের কাজ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীরা।

এলজিইডির রাঙ্গামাটি অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কোনো প্রকল্পের আওতায় গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রম অসম্পূর্ণ রাখা হয় না। একপর্যায় সম্ভব না হলে পরের পর্যায়ে তা সম্পন্ন করা হয়। অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার ও ১০০ মিটারের ঊর্ধ্বে প্রকল্পগুলোর ডিপিপিতে বান্দরবানের কোনো স্কিম থাকলে তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলার জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পর্যটন জেলা বান্দরবানের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় নান্দনিক নকশায় সেতু নির্মাণ হলে পর্যটকদের সমাগম বাড়বে।’

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংশৈপ্রু চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত উন্নয়ন চলমান রয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় বর্তমানে এলজিইডির কোনো প্রকল্প না থাকাটা কাঙ্ক্ষিত নয়।’ পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এলজিইডির অবকাঠামগত উন্নয়ন, যোগাযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আরও