১৬০০ নলকূপ অকেজো

আর্সেনিকসহ পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে চাঁদপুরে

টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বন্যা দেখা দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও উপজেলার ১ হাজার ৬০০ নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টানা বৃষ্টি জোয়ারের পানিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বন্যা দেখা দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও উপজেলার হাজার ৬০০ নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে অঞ্চলে। অপরিশোধিত পানি পানের কারণে আর্সেনিকসহ পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশ্য দ্রুত এসব নলকূপ ব্যবহার উপযোগী করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ।

বিভিন্ন দপ্তরের সূত্র আগের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, দুই যুগ আগে দেশের সর্বোচ্চ আর্সেনিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তারপর থেকে আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অঞ্চলে।

উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের বেততলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আকতার হোসেন শিহাব জানান, বন্যায় অঞ্চলের বেশির ভাগ নলকূপ ডুবে যায়। পানি নেমে গেলেও এগুলো ব্যবহারে অনুপযোগী। আগে থেকেই পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি ছিল। আর্সেনিকমুক্ত নলকূপগুলো পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সুপেয় পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের কোঁয়ার গ্রামের শান্ত হাসান জানান, বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত নলকূপের পানি ব্যবহার করছেন না।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের পর থেকে সরকারিভাবে আর্সেনিকের কোনো ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে না এখানে। অথচ ২০১৮ সাল পর্যন্ত হাজার ৬৬৯ জন আর্সেনিকোসিস রোগী শনাক্ত করার হিসাব রয়েছে। তবে বাস্তবে সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা। পর্যন্ত উপজেলায় তিনজন আর্সেনিকোসিস রোগীর মৃত্যুও হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার হোসেন জানান, বন্যায় স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করছেন মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তারা আর্সেনিকসহ পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন পরামর্শও দিচ্ছেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শাহরাস্তি উপজেলায় সরকারিভাবে হাজার ৭৬৩টি গভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে এবারের বন্যায় হাজার ৬০০টি নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে অগভীর নলকূপ রয়েছে আরো কয়েক হাজার। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না হলে আর্সেনিকসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা অঞ্চলের মানুষের।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানির সংকট কমাতে প্রায় ১৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। দ্রুত ইউনিসেফের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত নলকূপগুলো হাইজিন কিট দিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করা হবে।

আরও