ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদে স্টিল আর্চ সেতু নির্মাণ

প্রকল্প শেষের সময় ঘনিয়ে এলেও কাজই শুরু হয়নি

সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ সেতু নির্মাণ করছে সরকার।

সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ সেতু নির্মাণ করছে সরকার। ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ রয়েছে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। সে হিসাবে অবশিষ্ট রয়েছে এক বছর। তবে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ না হওয়ায় এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। শুধু প্রকৌশলী, কর্মচারী শ্রমিকদের থাকার জন্য শেড স্থাপন করা হয়েছে। কাজ শুরু করতে না পারায় প্রতি মাসে ১০-১২ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যাদের জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে তাদের কেউই এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। তাই তাদের আপত্তি রয়েছে। সেতু নির্মাণে তাদের বাধা দেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। কিন্তু তার আগে প্রকৃত ভূমি মালিকদের প্রাপ্য বুঝিয়ে তারপর কাজ শুরুর দাবি এলাকাবাসীর।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি পাস হয়। প্রকল্পের আওতায় হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাজার ৪৭২ মিটার দীর্ঘ সেতুসহ রেলওয়ে ওভার পাস নির্মাণ করা হবে। মূল সেতুটিতে ৩৩০ মিটার স্টিল নেটওয়ার্ক স্ট্রাসের তিনটি স্প্যান, ২৩টি পিসি গার্ডার, ৭৮৫ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল, স্ট্রিট লাইটিং, ফুটপাত ড্রেন এবং ইন্টারসেকশন থাকবে। সেতুটির কাজ পেয়েছে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

এদিকে গত বুধবার প্রকল্প ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সদর মোহাম্মদ খলিলুর রহমান।

বিষয়ে রহমতপুর সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, ‘ভূমি অধিগ্রহণের বিষটি সমাধান না হওয়ায় সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। নির্মাণ সরঞ্জাম এখানে পড়ে রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতি মাসে ১০-১২ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। এজন্য জেলা প্রশাসনকে আরো তৎপরতা বাড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।

নির্মাণকাজ বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ সড়ক জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসাইন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সেতু নির্মাণের আগে স্থানীয়দের সঙ্গে একাধিকবার মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সেতু নির্মাণের সুফল সম্পর্কে তাদের জানিয়েই নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু নোটিস দেয়ার পর গুজবে কান দিয়ে তারা আপত্তি জানিয়েছে। এজন্য এখন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌথ তদন্ত করা হচ্ছে।

বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরী বলেন, ‘নিয়ম মেনে এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে অধিগ্রহণের বিষয়ে কাজ চলমান। যৌথ তদন্ত শেষ হলে শিগগিরই সাত ধারার নোটিস দেয়া হবে।

সড়ক জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কেওয়াটখালী সেতু হবে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম দৃষ্টিনন্দন স্টিল আর্চ সেতু। এটি নির্মাণ হলে ঢাকা ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো উন্নয়ন ঘটবে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে অবস্থিত স্থলবন্দর, ইপিজেড অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ স্থাপন সুগম করবে।

আরও