জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় প্রতি মাসে সরকারের ব্যয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় মোট ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে গড়ে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় মোট ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে গড়ে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার বেশি। যদিও অভ্যুত্থানের পরে গত সাত মাসে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এ বিপুল পরিমাণ খরচের বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি। খরচ না কমলেও জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে সর্বত্রই রয়েছে নানামুখী আতঙ্ক।

রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয়ও এখন চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো অপরাধ বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে রাজধানী ও নগর এলাকাগুলোয় সন্ধ্যার পর নগরবাসীকে চলাচল করতে হচ্ছে অত্যন্ত ভীতি নিয়ে। অনেক জায়গায় আসামি ধরতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হচ্ছে পুলিশও। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথে অপরাধীদের বেপরোয়া হয়ে ওঠার পাশাপাশি পুলিশের মনোবলের ঘাটতিও এখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বাহিনীটির কর্মকর্তারা। আর বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে সরকারের মোট ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এ ব্যয় ১০ কোটি টাকা বেড়ে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। প্রতি মাসে এ বাবদ গড়ে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ২৫ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোর পেছনে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরটি ছিল নির্বাচনী বছর। সেজন্য ওই বছরে আইন-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা খাতে বিপুল অংকের বরাদ্দ এবং খরচ করা হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আইন-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তায় খরচ বাড়লেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার বিষয়টি খুব একটা স্বাভাবিক না। কারণ নির্বাচনী বছরে পুলিশের নিয়মিত দায়িত্বের বাইরে অতিরিক্ত কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর কার্যত তিনদিন দেশের কোথাও পুলিশের কোনো কার্যক্রম ছিল না। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পুলিশ কর্মস্থলে ফিরে এলেও অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সেভাবে টহল কার্যক্রম বা চেকপোস্ট কার্যক্রম দেখা যায়নি। এরপর গত কয়েক মাসে জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় ব্যয়ের বহর বাড়লেও পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো যায়নি।

গণ-অভ্যুত্থানের পর ব্যাপক জনরোষের শিকার হয় পুলিশ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুলিশের ৪৬০টি থানা ও স্থাপনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় থানাগুলোর কার্যক্রম স্বাভাবিক করে তোলার কাজ শুরু হয়। কাজে ফিরে আসে পুলিশও। তবে ছয় মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসেনি। বরং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর মতো এলাকাগুলোয় খুন, অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের ঘটনা বেড়ে গেছে। যদিও এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে এখনো কার্যকর ভূমিকা নিতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে খুন, অপহরণ, চুরি, ছিনতাই ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে মোট ৫ হাজার ৮৬২টি। এর মধ্যে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৩২৯টি। খুনের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৫৪৫টি। সেই সঙ্গে ছিনতাই ও চুরির মতো অপরাধও বেড়েছে এ সময়ে। এ সময়ের মধ্যে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ৩ হাজার ১৫৩ ও ৬২৩টি। আর দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১৯২টি।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোনো দেশ চলতে পারে না উল্লেখ করে মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের পরিচালক ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য নাসির উদ্দিন এলান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর পুলিশ এবং পুলিশের স্থাপনাগুলো সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। এর পর থেকে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। তবে এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। পুলিশকে অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াতে হবে এবং জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ যদি এটা না পারে তাহলে দেশে একের পর এক বিশৃঙ্খলা ঘটবে।’

ডিসেম্বরের পর গত দুই মাসেও দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে গিয়েছে। ছিনতাই, চুরি ও মবের মতো ঘটনাগুলো নিত্যদিনই ঘটছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বনশ্রীতে নিজ বাসার সামনে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার। তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে আসা ছিনতাইকারীদের একটি দল গুলি ও ছুরিকাঘাত করে তার সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক যুগলকে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে আঘাতের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে।

দেশের অর্থনীতিতেও চাপ তৈরি করছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি। দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন চাঁদাবাজির মাত্রাও বাড়তে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে পণ্য পরিবহন খাতে এ চাঁদাবাজির মাত্রা এখন বেশি। সবজি বা অন্যান্য খাদ্যপণ্য পরিবহন করে রাজধানী বা অন্যান্য বড় শহরে আনতে কয়েকটি পয়েন্টে চাঁদা দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এ ব্যয় পণ্যের দামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে উসকে দিচ্ছে মূল্যস্ফীতিকে।

রাজনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে পুরনো কাঠামো থেকে বের করে আনা প্রয়োজন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গত রেজিমে পুলিশ সবচেয়ে বেশি জুলুম করেছে। সেজন্য পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নেই। আবার পুলিশরাও নিজেদের কৃতকর্মের জন্য নিজেরা ভয় পাচ্ছেন। কোথাও কোথাও এখনো তারা ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে মিলে কাজ করছেন। এত বড় একটা পুলিশ বাহিনীকে চট করে সরিয়ে দেয়া যায় না। তবে কিছু নতুন ইয়াং ফোর্স নেয়া দরকার, যাতে তারা নতুনভাবে উদ্যমী হয়ে কাজ শুরু করতে পারে। পুরনোদের মধ্যে যারা ভালো তাদের সক্রিয় করে পুলিশ বাহিনীকে জনগণের আস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘প্রতি মাসে আইন-শৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তায় খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার বেশি। নাগরিকরা সত্যিকার অর্থে কি সে তুলনায় কোনো সার্ভিস পাচ্ছে? ফ্যাসিবাদী সময়কালে পুলিশের ইমেজের যে ক্ষতি এবং তার ফলে যে পরিণতি হয়েছে; বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এর বাস্তবিক কোনো সমাধানই বের করতে পারেনি। সরকার এটিকে স্বাভাবিক পন্থায় সমাধানের যে পথে হাঁটছে তা পুরোই ব্যর্থ হবে বলে আমি মনে করি। প্রথমত, এ পুলিশ বাহিনীর মনোবল ও ইমেজ শিগগিরই ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখি না। সেক্ষেত্রে খুব দ্রুত একটা নতুন বিশেষ বাহিনী রিক্রুট করা উচিত, যারা বিগত নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়কার অঙ্গীকারে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করবে।’

অনেকটা একই বক্তব্য দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বণিক বার্তাকে বলেন, ‘প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো ফ্যাসিবাদের সময়ের কাঠামো থেকে বের হতে পারেনি। একই সঙ্গে তারা সরকারের ভেতর থেকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বরং জনগণকে আরো অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখছেন। নানা আন্দোলন হলে সেখানেও আগের মতো হামলা, লাঠিচার্জ চলছে। আইন-শৃঙ্খলা উন্নতি করতে হলে শুধু খরচ বাড়িয়ে নয়, বরং কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। যেসব অফিসার সরাসরি দুর্নীতি ও গুম-খুনে জড়িত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

বর্তমানে শুধু সাধারণ জনগণই নন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অপরাধীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরাও। এমনকি অপরাধীদের তৈরি করা মবেরও শিকার হচ্ছেন তারা। সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাতে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত-সংলগ্ন আউটার রিং রোডে চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা এসআই ইউসুফ আলীকে মারধর করে তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও ওয়্যারলেস ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। এ সময় হামলার শিকার পুলিশ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী নিজের পরিচয় দিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে হামলাকারীরা তাকে ভুয়া পুলিশ বলে মব সৃষ্টি করে এবং দুষ্কৃতকারীদের ঘটনাস্থলে জড়ো করে। পরে খবর পেয়ে সি বিচ এলাকায় টহলরত পতেঙ্গা থানা পুলিশের একটি দল ও আশপাশের লোকজন এসে এসআই ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করেন। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ বাহিনীর ইউনিফর্মধারী সদস্যদের সঙ্গে দেশের অন্যান্য স্থানেও এমন অনেক ঘটনার নজির দেখা গেছে। এমনকি সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা হামলার শিকার হওয়ার বেশকিছু ঘটনাও ঘটেছে।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকালই বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকার কারওয়ান বাজার ও চট্টগ্রামের পতেঙ্গাসহ অন্যান্য স্থানে পুলিশ বাহিনীর ইউনিফর্মধারী সদস্যদের সঙ্গে কিছু উচ্ছৃঙ্খল, সমাজবিরোধী ও আইন অমান্যকারী ব্যক্তির সঙ্গে অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অসৌজন্যমূলক ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এতে পুলিশ বাহিনী মর্মাহত, চরম উদ্বিগ্ন ও আশাহত।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও শান্তি বিঘ্নকারী ব্যক্তি অযাচিতভাবে পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এতে জনমনে অশান্তি, হতাশা সৃষ্টি ও জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এসব আইন-শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী জনগণ ও সরকারের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ইস্পাতসম মনোবল নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের সাত মাস অতিক্রম হতে চলেছে। এখন সময় এসেছে পুলিশের কাজের জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার। সে সময় পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নৈতিক জায়গা ভেঙে পড়েছিল, এটা ঠিক। কিন্তু এরপরে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। এর পরেও জানমালের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ বাড়তে দেখছি। এখন মূলত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের মধ্যে সমন্বয় এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন, যোগাযোগসহ জনগণের জানমাল নিরাপদ করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শুরু করতে হবে। পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের পুরনো ধরন থেকে বেরিয়ে জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা দেয়ার জন্য কার্যকর করে তুলতে হবে। মোটকথা পুলিশকে সেবা দেয়ার মধ্য দিয়েই আবার নিজের নৈতিক অবস্থান ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যকারিতা তৈরি করতে হবে।’

পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাহিনীটির সদস্যরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির চলমান টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫০টির বেশি টহল দল মোতায়েন থাকে। ৭০টির বেশি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোয় ব্লক রেইড পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পুলিশ তার পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পুলিশ সদস্য কাজ করে যাচ্ছেন। রাজধানীসহ সারা দেশেই টহল ও তল্লাশিচৌকির কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে পুলিশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

আরও