জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘এলএনজি একদিকে আর্থিক বোঝা, আরেক দিকে পরিবেশগত বিপর্যয়। বাংলাদেশকে অবশ্যই আমদানি করা এলএনজি ও বিদেশী স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত বিদ্যুৎ পরিকল্পনা থেকে সরে এসে দেশীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের পথ অনুসরণ করতে হবে। এটি দেশে জীবিকা রক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা উন্নত ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি জ্বালানি আমদানির উচ্চ খরচ থেকে রক্ষা করবে।’
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। জ্বালানি নীতি যেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে না হয়, সেই আহ্বানও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ‘ব্যয়বহুল এলএনজির বিস্তার: বিদেশীদের এলএনজি-সংক্রান্ত স্বার্থ যেভাবে বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি তৈরি করছে’ শিরোনামে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কেট ফোর্সেস, ফসিল ফ্রি চট্টগ্রাম, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন বাংলাদেশ পরিবেশবান্ধব, সবুজ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটা পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের জন্য কম মূল্যে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য পরিচ্ছন্ন ও সবুজ জ্বালানিতে উত্তরণের উপায় হিসেবে বেশকিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো–আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানি, যেমন কয়লা ও এলএনজি, যা আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারের অস্থিরতার ওপর নির্ভরশীল, তার ব্যবহার কমাতে হবে; সব ধরনের প্রস্তাবিত এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্প ও এলএনজি আমদানি অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রত্যাহার করতে হবে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিকস জাপান (আইইইজে) দ্বারা প্রণীত এলএনজিনির্ভর মাস্টারপ্ল্যান সংশোধন করা প্রয়োজন; পরিকল্পিত এলএনজি প্রকল্পগুলোর তহবিল নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং গ্রিড অবকাঠামোর উন্নয়নে পুনর্নির্দেশ করা প্রয়োজন; একটি আধুনিক গ্রিড এবং উন্নত ট্রান্সমিশন অবকাঠামো গড়ে তোলার দিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহারকে সমর্থন করবে।