গফরগাঁওয়ের শীতল পাটি জৌলুস হারাচ্ছে

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দুটি গ্রামে শীতল পাটি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ছিল।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দুটি গ্রামে শীতল পাটি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ছিল। তবে প্লাস্টিকের পাটির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না ক্ষুদ্র এ কুটির শিল্পটি। জৌলুস হারালেও ৭০টি পরিবারের দুই শতাধিক মানুষ শীতল পাটি বুননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 

শীতল পাটি বুনন শিল্পী সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল চন্দ্র দে বলেন, ‘এত প্রতিকূলতার মধ্যেও পূর্বপুরুষের পেশা এভাবে ধরে রাখার ঘটনা বিরল। যারা এখনো এ পেশায় জড়িত তাদের টিকিয়ে রাখতে পাটি শিল্পীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, পাটির ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে দেশে-বিদেশে বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

গফরগাঁও উপজেলার সদর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে পাগলা থানার নিগুয়ারি ইউনিয়নে বানার নদীর পাড়ে কুরচাই ও চাকুয়া গ্রাম দুটির বেশির ভাগ মানুষ একসময় শীতল পাটি বুননের কাজ করত। এ কারণেই গ্রাম দুটি শীতল পাটির গ্রাম নামে পরিচিত। গ্রাম দুটিতে শীতল পাটির বুনন শিল্পীদের বসবাস অনেক আগে থেকেই। একটা সময় ছিল দুটি গ্রামে বেতের চাষ হতো। তখন পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার শীতল পাটি বুননের কাজে জড়িত ছিল। কুরচাই ও চাকুয়া গ্রাম দুটির শীতল পাটিকে কেন্দ্র করে বানার নদীর পাড়ে একসময় গড়ে উঠেছিল শীতল পাটির হাট।

পাটি বুনন শিল্পীরা জানান, একেকটি বেত গাছ তিন ফালি করে কাটা হয়। তারা সাধারণত পিঠা পাটি, ডালা পাটি, বোকাই পাটি এবং শীতল পাটি তৈরি করেন।

শীতল পাটি বুনন শিল্পী কবিতা রানী দে বলেন, ‘আমরা বংশগতভাবেই এ কাজ করে আসছি। তবে প্লাস্টিকের পাটির কারণে আমাদের পাটির চাহিদা কমে গেছে। আমরা অন্য কোনো কাজ জানি না। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চলতে কষ্ট হয়।’

এ ব্যাপারে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদুর রহমান বলেন, ‘এ শিল্প টিকেয়ে রাখতে পাটি বুনন শিল্পীদের সরকার থেকে ঘর করে দেয়া হয়েছে। তাদের সন্তানকে লেখাপড়ার জন্য শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের বিভিন্ন অনুদান দেয়া হয়। এ শিল্পকে ধরে রাখতে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।’

আরও